Friday, June 20, 2008

টোপ দিলেই যে কেঁচো মাছ খেয়ে ফেলবে তার গ্যারান্টি কী? ৫

চাকা ঘুরতে থাকে। সেকেন্ডের কাঁটা ডিগবাজী দিয়ে ঘোরায় মিনিটের কাঁটাকে আর মিনিট ঘন্টাকে। ঝুঝতে শিখি, ঘড়িকে যে গ্রীপেই ধরি না কেন প্রতিটি ডেলিভারিই গুগলি। যখনকার শট তখনই নিতে হবে। প্রস্তুতিটুতি কিছু না। পৌন:পুণিক উইকেট পতনে ঝুলি খালি হতে বুঝি, জমালেই সবকিছু জমে না। জানতে থাকি বুঝতে থাকি ব্যাজার মুখে। আকাশে বাতাসে জ্যামিতিক প্রসব বেদনা। ক্ষেত্ররা সব ফলের আশায় কর্মযজ্ঞের যোগাড়যন্ত্র করে। বড্ড তাড়াতাড়ি বুড়ো হই আমরা। সরে যেতে থাকি,সরে যাই,সরে যাচ্ছি ডাইভ দিতে দিতে। পাখনায় টান পেলে অজ্ঞাতবাসে তুরীয় সন্ধ্যা। মরচের ক্যাচঁ ক্যাঁচে পুরনো সুরের মৌজ বাড়ে। পাগলা কলন্ধর ঊর্ধ্ববাহু নাচে।

১৭ মে ২০০১। কোন এক ক্লাসে ব্যাজার বসে থাকা থেকে বাঁচতে প্রিয়দর্শিনী সহপাঠিনীর সাথে কাটাকুটি খেলছিলাম। জীবনের বেশীরভাগ খেলা জাগামতো খেলা হয় না। তাই ভুল খেলাতেই তুষ্ট ছিলাম। এর মধ্যে হঠাৎ মৃদু ঠক্ ঠক্ খিড়কিতে। প্রিয়দর্শিনী উঠে বাইরে গেল। ফিরে এসে চিরকুট গুঁজে দিলো হাতে । সবুজ বাঘ লিখেছে :


উদ্ধৃতি
মৃতরেখা রাত দশটা; ১০১ কামালুদ্দিন হল

জলের গভীরে মাছরাঙার যন্ত্রণা


বুঝলাম। বুঝে ইজি থাকলাম। তারপর বাকি দিন ঠিকঠাক পানাহার। উদর লাইনে রেখে পৌছলাম আগেভাগে। শুনলাম পল শুয়োরের জোগান দেবে। মন ভালো হলো। সেই ১৯৯৯ সালে বান্দরবানে মাসীর বাড়িতে জমজমাট মজমার পর দুবছর আর ঘোঁৎঘোঁৎ পেটে পড়েনি। মাল এলো। তাস ফুরলো। আমরা টানার সময় খেলি না। সবুজ বাঘের চনমনে মেজাজে বোঝা গেল দিলীপের আস্তানায় ভালোমন্দ মেরে এসেছে। মৃতরেখা পেরিয়ে সাড়ে দশটা হলো। একে একে পাপীদের সমাবেশ ভারী হলো। ১০১ কামালুদ্দিনে থাকতো শশাঙ্ক বরণ রায় আর ফিরোজ আহমেদ। ঘর ভরা কবিতার বই আর কাটাকুটি। দেয়ালে আঁকাবাঁকা বোধিসত্ত্ব। প্রথম আবর্তন পেরোতেই ১০২ থেকে ভালোমানুষ ছোকরা এসে হাত জোড় করতে সিদ্ধান্ত হলো ছাদের নীচে আবার কিসের মজমা?

ছুটলাম মুক্তমঞ্চে। সবাই। সব মিলিয়ে জনা আটেক। বাংলার ছিপি খুললো। পল খুললো হটক্যারিয়ারের ঢাকনা। ভুনা-শুয়োরের সাথে পুর্ণিমা রাতে চোলাইয়ের রোশনি হারানো স্বপ্নগুলি ইত:স্তত মেরামত করে। আমি, ফিরোজ, পল আর সবুজ বাঘ উদ্দাম নৃত্য করি, কেউ কেউ কাঁদে কিজানিএক্টা অপ্রাপ্তির শোকে, বোতল ফুরোলে কেউ কেউ যায় শুকনোর খোঁজে। খালি ক্যারিয়ার আর গোটাদুই ৭৫০ এমএলের খালিবোতলের পাশে ভোলানাথ তাজা হন। আমরা রেলগাড়ি চালাতে লাইনের প্রশ্নে একমত হই। তার আগের আরো আগের আরো অনেক রেললাইন আর রেলগাড়ির কথা আসে। আমরা বুঝেশুনে চেপে যাই। চেপে আনন্দিত হই। একটা কিছু অন্তত চেপে যাওয়া গেলো.......

No comments: