Saturday, November 06, 2010

টুকরো টুকরো লেখা ২৪

ভাবেসাবে মনে হচ্ছে এইবার শীতকালটা উল্টা পোলভোল্ট করে ২০০৬/৭ বা ২০০৭-৮ এ চলে যাবে। নইলে আজ ২৯ অক্টোবর দুপুরে শুধু একটা টিশার্টের উপর জ্যাকেট পড়ে ঘামাতে হতো না। বুড়ো জার্মানরা অবশ্য এই জাতীয় আবহাওয়ায় অখুশী। তাঁদের মতে শীতের দিনে শীত না পড়ার অর্থ সামনে কোন অমঙ্গল অপেক্ষা করে আছে। হয়তো ঠিকই বলেন। তবে সারাদিন রোদ পাওয়া যাচ্ছে বলে তেমন খারাপ লাগছে না। বরং বর্তমান পরিস্থিতে অন্যায় করে হলেও ভালোই লাগছে। অন্তত কিছুক্ষণের জন্য হলেও একটু ইজি লাগছে। জীবন, পারিপার্শ্ব আর দিনদুনিয়ার এই পরিস্থিতিতে ভালা লাগাগুলি পট করে এসে ফট করে মিলিয়ে যায়। চোখে রোদ পড়ে ঘুম ভাঙার ভালো লাগা দিনের পেটে প্রবেশ করতে করতে চিরতা হয়ে যায়। তারপর সন্ধ্যা নাগাদ মনে হয় ভালা লাগা বলে কিছু নাই। এটা মিডিয়ার সৃষ্টি।

১.

গতকালকে সকালের দিকে শোনা গেলো রাজাকারকূলশিরোমণি গোলামাজম বৃটিশ ভিসা পেয়ে গেছেন। অর্থাৎ শালার পো যে কোন মুহুর্তে ভাগবে। সংবাদপত্রের পাঠকের দৃষ্টিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়াও শ্লথ। অন্যদিকে একটা করে দিন যাওয়ার অর্থ হচ্ছে বর্তমান সরকারের মেয়াদ প্রতিদিনই একদিন করে কমছে। এই পর্যন্ত ধরা পড়েছে মোটে চারজন। তাঁদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলার এখনো পর্যন্ত চার্জশিট হয় নাই। গ্রেফতার না হওয়ারাও সংখ্যায় অনেক। তার সাথে যোগ হয়েছে ইসলামী ধর্মনিরপেক্ষতা। ছাত্রলীগ আর যু্বলীগ অনলসভাবে আগামীতে ক্ষমতায় না আসতে পারার ভিত রচনা করে চলেছে। সঙ্গে আছে জলপাই বাহিনি। যুদ্ধাপরাধের ইস্যু ঝুলিয়ে রেখে পরের সেশনে নির্বাচিত হবার যে  দিবাস্বপ্ন ক্ষমতাসীন দল দেখছে তার ভয়াবহ পরিণতি শেষ পর্যন্ত জনগণকেই ভোগ করতে হবে। রাজনীতির ইতিহাসে আজ পর্যন্ত শেষতক জনগণ ছাড়া আর কারো নির্যাতিত হবার ইতিহাস অতিঅল্প। এবারও সম্ভবত তাই হবে। এসব কোন কিছুই অপ্রত্যাশিত নয়। শুধু এতোকিছুর পরেও ছাগুদের উল্লসিত মুখগুলো আরো দেখতে হবে এই হতাশাটুকু কামড়ে ধরে। এই আর কি।


২.

হাতে অস্ত্র থাকুক আর যাই থাকুক পুঁজিবাদী রাজনৈতিক আধিপত্য শেষবিচারে পকেটে। সেখানে টান পড়লে ড্যাশিঙ মাস্তানরাও ভেউ ভেউ করে কাঁদে। বৃটেন এমাসে সামরিক ব্যয় সঙ্কোচনের ঘোষনা দিয়েছে। আর তাতে বারাক ওবামার গুডবয় সরকার ব্যপক উদ্বিগ্ন। আফগানিস্তানে বা ইরাকে সৈন্য পুষতে যে আলাদা করে পকেটের জোর দরকার সাহেবরা বর্তমানে সেই অবস্থায় নেই।   অন্যকোন বলির পাঁঠা খুঁজে সেখান থেকে একদফা বড় দাঁও মারার আগ পর্যন্ত সাহেবদের পকেটের অবস্থার বড় কোন পরিবর্তন হবার সম্ভাবনা অল্প। এরকম পরিস্থিতিতে তাঁরা অর্থাৎ বিশ্বরাজনীতির কথিত মোড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর বৃটেন এই সময় চাইছে বাংলাদেশের মতো দেশগুলি থেকে সৈন্য নিয়ে আফগানিস্তান আর ইরাকে পরোক্ষ দখলদারি চালিয়ে যেতে। যাতে আক্রান্ত হলে আর সাহেবদের মরতে না হয় আবার সৈন্য পুষবার খরচটাও বাঁচে। 
বাংলাদেশ সরকারের এই বিষয়ে শেষ সিদ্ধান্ত জানা গেলো কি?


৩.

আমি সঙ্গীত জিনিসটা এমনিতে একেবারেই বুঝি না। শুধু শুনে শুনে এর তার ভক্ত। রক-মেটালের ভক্ত হলেও বয়সের সাথে সাথে ব্লুজের টান ক্রমশ বাড়ছে। আজকে নিরতিশয় ক্লান্ত-বিকালে কি মনে করে ইউটিউবে সার্চ দিয়ে পেয়ে গেলাম খুব পছন্দের কয়েকটা গান। নিজে লুরমা টাইপ বলেই সম্ভবত অতিবিশাল বস লোকজনদের একবাক্যে গুরু মানি। বিকালে বাড়ি ফিরে ইউটিউবে বি.বি.কিং সার্চ দিয়ে গোটাকয়েক পুরনো গান শুনে পাংখা হয়ে সাময়িক ভালো লাগা চাখলাম খানিকক্ষণ। আমি জানি এই ভালো লাগার মেয়াদ বালিশে মাথা দিয়ে চোখ বুঁজতে বুঁজতে শেষ হয়ে যাবে। কাল সকালে আবারো প্রতিদিনের মতো বিড় বিড় করে বলবো ভালো লাগা বলতে কিছু নাই। এটা মিডিয়ার সৃষ্টি।






No comments: