কত সহজেই না রাজনীতির মারপ্যাঁচে ইতিহাসের দগদগে ঘা'কে আমরা ঢেকে রাখি। প্রতিবছর ঘুরে ঘুরে ১৪ ডিসেম্বর এলে বিচার চাই বিচার চাই বলে আবার চাদর টেনে দেই। গ্যাংগ্রীনের পুঁজ মেখে সেই চাদর বহুদিন থেকেই তার বর্ণহীনতা খুইয়েছে। এখন চট করে বাইরে থেকে দেখলে একরকম ডেকোরেশন মনে হয়। বেশ চমৎকার মানিয়ে গেছে বর্ণাঢ্য ইতিহাসের শোকেজে। বছর বছর ঘোমটা খুলে কয়েক মুঠো ধবধবে সাদা লবণ ছিটাবার রিচুয়াল পালন .....
রিচুয়াল পালিত হয় বরাহপুরীতেও। সবার সাথে সাথে তাঁদেরও কিছু বলার আছে। সকল প্রপঞ্চের সমাবেশ জরুরি'র দোহাই দিয়ে আমরা ঘোঁৎ ঘোঁৎকেও ভাষা বলে মেনে নিয়েছি। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ দেওয়ালে মাথা ঠুকি, খামচাই ...তাতে কপাল আর নখের শ্রাদ্ধ ছাড়া কোন প্রাপ্তি নাই ......
১৪ ডিসেম্বর যারা প্রাণ দিয়েছেন তাঁদের অপরাধ ছিল তাঁদের মেধা তাঁদের যোগ্যতা। সেই মেধা-ধ্বংসযজ্ঞের লাভবানদের একটা যৌনকেশও আমরা ছিঁড়তে পারি নাই। মেধার বিকাশ আর প্রয়োগের গলায় ফাঁস দিতে দিতে এখন আর গ্যাংগ্রীনের যন্ত্রণাও কেউ অনুভব করে না ...
কেউ কেউ হয়তো করেন। কিন্তু শল্য চিকিৎসার শস্ত্র থেকে তাঁরা বহুদূরে। তাঁদের নাগালে চাপা কান্নার গলা টিপে ধরার দুটি হাত ছাড়া আর কিছু নাই।
অথচ এই একটি দুটি হাত জড়ো হতে হতে একটা প্রকাণ্ড বিস্ফোরণ হতে পারতো।
নিজেকে চড় মারি। লাথি মারি। ফজলে রাব্বির হৃদপিন্ড উপড়ে ফেলা লাশটা বারবার দেখি। ভোঁতা স্মৃতিতে শান দিতে চাই, পুরনো বারুদে প্রাণের শুস্কতা তুলে আনতে চাই। আসে না। সব শেষে ঐ গোঙানিটাই বেঁচে থাকে।
ভাবতে চেষ্টা করি হয়তো হবে কোন একদিন সেই বিস্ফোরণ। মৌসুমী স্মৃতিকথা আর লাভের রাজনীতির ডেঁয়ো পিপড়াদের বদলে সর্বশক্তিমান জনতাই সেটা ঘটাবে। এইটুকু নিস্ফল আশার আস্ফালন বেঁচে থাকে .....
বুদ্ধিজীবি হত্যার বিচার চাই না।
প্রতিশোধ চাই!
No comments:
Post a Comment