Sunday, July 15, 2007

টুকরো টুকরো লেখা ১

টানা সপ্তাহদুয়েক চোখে অন্ধকার দেখছিলাম। আলো দেখার সামগ্রীক বাস্তবতা যে এসে গেছে এমন না। তবে সকালে ঘুম ভেঙেছে চোখে রোদ পড়ে। ব্যস্ততার সময়টুকু আবহাওয়া ছিল জঘন্য। কাঁচা রোদের সাথে ফুরফুরে বাতাসে মনে একরকম ফুরফুরা শরীফ এফেক্ট তৈরী হয়। গলা পর্যন্ত চিপায় থাকলেও মনে হয় ঠিকাছে।
অনেক দিন ধরে ভাবছিলাম কি যেন লিখবো,কিন্তু লেখা হচ্ছে না। মনে হচ্ছে মগজে সর পরে গেছে। সাবধানে তুলে কোঁৎ করে গিলে ফেলতে হবে। কিন্তু তুলতে ভরসা পাচ্ছিলাম না। এদিক ওদিক হলেই সর্বনাশ। ফুরফুরে বাতাসে মনে পড়লো নিজের ফতোয়া প্রতিটি সাক্ষরই একেকজন লেখক তারপর কিছুক্ষণ এলোমোলো ঘুরলাম এই পোস্টে থেকে সেই পোস্টে, সামহোয়ারে একটা গান দিলাম,ঘন্টাখানেক ক্লাসিক্যাল শুইনা হঠাৎ রোলিং স্টোনস্ এ ফিরলাম। তারপর বিটলসে আইসা মনে হৈল ..তেজা ..আজা...
লেখার বিষয়বস্তু বা মান সম্পর্কে পূর্ব নির্ধারিত অবস্থান লেখককে খরায় ফেলতে পারে। এমনকি লেখক যখন ধুনফুন একটা কিছু নামাতে চান তখন এই ধুনফুন বিষয়টাই একটা প্রশ্ন হয়ে দাড়ায়। অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে সুপার হিট পোস্টের তালিকায় প্রচলিত অর্থে ধুনফুন মোটামুটি সংখ্যাগরিষ্ঠ। সেক্ষেত্রে ধুনফুনের প্রচলিত সংজ্ঞার্থে ভরসা কমে আসে।
সেরকমই কি যেন ভাবছিলাম গত দুঘন্টা ধরে। এর মধ্যে বীয়ারের মগে দুই দফা কফি হয়ে গেল। বিড়ি খাওয়ার ইচ্ছাটা একবার মাথা চাড়া দিয়ে আবার চুপচাপ। ভালো লক্ষণ। বিড়ি এখন আক্ষরিক অর্থেই কমেছে। দু সপ্তাহে এক প্যাকেট।
...............................
গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে..কিংবা তারো আগের সপ্তাহে কামলা দিচ্ছিলাম গ্রাসাচ্ছাদনোপোলক্ষ্যে। একবারে মেইনস্ট্রিম প্রলেতারিয়েতের চেহারায়। মোবাইল রাখা ছিল টেবিলে। রিঙ্গার বন্ধ। হঠাৎ দেখি অচেনা নাম্বার থেকে ফোন। ধরলাম। বন থেকে মাসকাওয়াথ আহসান। একটা ২ মিনিটের সাক্ষাৎকার দিতে হবে। তখনই। একটু যে খুশী হবো তারও সময় নেই। ঘরে তখন কেউ নেই। অনেকেরই ঘন্টা শেষ। মাসের শেষে কাজও কম। একটু ভ্যাবাচ্যাকা অবস্থান থেকেই বললাম ঠিকাছে। বিষয়বস্তু লেখাপড়া শেষে দেশে ফেরা।বাংলাদেশী ছাত্রদের মধ্যে দেশে ফেরার হার কম কেন..যেখানে ভারতীয় ছাত্রদের বৃহত্তর অংশটাই ফেরত যাচ্ছে ইত্যাদি। কি বলবো? চট করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বলে ফেললাম সত্য কথাই। অগোছালোভাবে। বললাম ভারতীয় বা চীনা ছাত্ররা ফিরতে ভরসা পাচ্ছে তাদের দেশে একটা কাঠামো তাদেরকে ধারণ করার জন্য তৈরী হয়ে আছে বলে। বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে কিছু করতে হলে আগে সেই ক্ষেত্রটা প্রস্তুত করে নিতে হবে। বিষয়টা চ্যালেঞ্জিং। মাসকাওয়াথ আহসানের পরবর্তী প্রশ্ন,আপনি কি বলতে চাচ্ছেন বাংলাদেশী ছাত্ররা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে ভয় পায়? খুব অসহায় বোধ করছিলাম। বললাম, বিষয়টা ঠিক ভয়ের না। সবাই এখানে এসেছে ক্যারিয়ার গড়তে। যে অপশনটা সহজ, যাতে নিশ্চয়তা বেশী, স্বাভাবিকভাবেই সেটা অগ্রাধিকার পায়। এই পর্যন্ত আসতে ধন্যবাদ দিয়ে সাক্ষাৎকার শেষ হলো। সময়টা ফুস্ করে উড়ে গেল আর কি।
পরের ঘন্টা তিনেক খুব মন খারাপ লাগছিল। কেন বলতে গেলাম এই কথা?একটু মসলা লাগিয়ে কৌশলি মিথ্যা বললেই তো হতো!ডয়েশে ভেলের শ্রোতারা আমারে বেকুব মনে করবো নিশ্চয়ই। পরে পাউজের সময় মনে মাথায় বহু পুরাতন একটা থিসিস চ্যাগা দিয়া উঠলো সত্যের ম্যানিপুলেশন ছাড়া সৌন্দর্য্য নির্মাণ সম্ভব না ....ঠিক ঠিক...সৌন্দর্য জিনিসটা নির্মান করতে গেলেই ঝামেলা....

No comments: