Wednesday, August 05, 2009

টুকরো টুকরো লেখা ১৩

আমার দ্বারা আর কখনো নিয়মিত লেখা আদৌ হবে কিনা আজ সারা দুপুরবিকাল ধরে সেটাই ভাবছিলাম। সচলায়তন খোলাই থাকে মোটামুটি সারাদিন। মাঝে মাঝে লগইন করে এদিক ওদিক ধুনফুন কমেন্ট করি, তারপর ভুদাই হয়ে বসে থাকি। কখনো দুইলাইন তিনলাইন লিখলেও মনে হয় এইটা আবার কী লিখলাম? কখনো গুণ গুণ করি, আমি সব দেখেশুনে ক্ষেপে গিয়ে বলি বাংলায়, ধুর বাল!

১.

গতকাল ছিল ২ আগস্ট। ১৯৯৯ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে অভূতপূর্ব একটা ঘটনা ঘটে। ছাত্রজনতার ধাওয়ার মুখে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা প্রাণ নিয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিল। দেড়মাসের জন্য হলেও জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাস সম্পূর্ণভাবে আমাদের নির্বাচনী রাজনীতির দুই স্তম্ভ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের দুই লুম্পেন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ আর ছাত্রদলের নিয়ন্ত্রণমুক্ত থেকেছিল। ১৯৭২ সালে থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত সেই আগস্ট-সেপ্টেম্বরের ঐ কয়টা দিনই আক্ষরিক অর্থে স্বাধীন বাংলাদেশের কোন শিক্ষাঙ্গন লুম্পেনদের দখলদারিমুক্ত ছিল।

ঘটনা অতি সংক্ষিপ্ত। খিয়াল কৈরা এইটা আর এইটা , এই দুইটা পোস্ট পৈড়া আসেন আগে। তাইলে এই পোস্টের এই অংশের সাথে মোটামুটি কমিউনিকেট করতারবেন।

১৯৯৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে গণঅভ্যুত্থানের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সত্যাসত্য যাচাই কমিটি ধর্ষণকারী ছাত্রলীগ নেতাদের নাম প্রকাশ করতে বাধ্য হলে ধর্ষণকারী এবং ধর্ষণকারীদের সমর্থনকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নেতৃস্থানীয়রা ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হয়। ১৯৯৮ সালের সেপ্টেম্বরের ২৭/২৮ তারিখ থেকে একেবারে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই পর্যন্ত ক্যাম্পাস একভাবে মুক্তই ছিল। যদিও কিলার গ্রুপ তখন ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণ করছিল, কিন্তু কেন্দ্রের আর প্রশাসনের সমর্থনের অভাবে তাঁরা তাঁদের প্রত্যাশিত ক্যারিশমা দেখাতে পারছিলেন না। তাঁদের নিয়ন্ত্রণ সেই সময় একভাবে ক্যাম্পাস পাহারা দেওয়া ছাড়া আর কিছুই ছিল না। অন্তত আমার হলে ঐসময় ঠিক এই বাস্তবতাই বিরাজ করছিল। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ছাত্রলীগ নেতা ধর্ষণকারী বরকতের নেতৃত্বে ধর্ষণকারী গ্রুপ তার সমর্থকদের আর সাথে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে তখনকার পত্রিকার রেফারেন্সমতে মোহাম্মদপুরের ইমনগ্রুপের সন্ত্রাসীদের নিয়া জাবি ক্যাম্পাসে ঢোকে। খুব মজার ব্যাপার হৈল ছাত্রলীগের কিলারগ্রুপ এমনিতে ক্যাম্পাসের ভিতরে খুব হম্বিতম্বি করলেও সেদিন ঠিকই বামপন্থীদের সাথে একসাথে আন্ডারগ্রাউন্ডে যাইতে বাধ্য হইছিল। এর মোটামুটি ৪৮ ঘন্টা পরে এই বামপন্থীদের নেতৃত্বে বিশাল গণমিছিলের ধাওয়া খাইয়া বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ধর্ষণকারীগ্রুপের সমর্থকরা হল ছাইড়া ভাগতে বাধ্য হয়। ঠিক এইটাই ইতিহাস। এইটা এমনই একটা ইতিহাস যেইটা সম্পর্কে গাফফার চৌধুরী টাইপ আওয়ামী বুদ্ধিজীবিদের অ্যাবসলুউটলি কিছুই বলার নাই। ইতিহাসের রেফারেন্সগুলি এতোই শক্ত যে আ করতে গেলেই আলা জিবলা বরাবর জুতা ফিক্কা মারা হৈবো।

আমি ঐ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী না। ১৯ জুলাই থিকা আমি হাসপাতালে। ছিনতাইকারীর কোপ খাইয়া ডান হাত আর বাম ঠ্যাং আকাশে দিয়া চিৎ হইয়া আছি। বর্তমানে সচলদের মধ্যে যূথচারী, সবুজ বাঘ, শশাঙ্ক আর আয়েশা আখতার সেই ঐতিহাসিক ধাওয়ার প্রত্যক্ষ অ্যাক্টিভিস্ট। সবুজ বাঘ সেদিন ঘুষি দিয়ে জনৈক রেপিস্টের জানালা ভেঙে ফেলেছিলেন। কেউ যদি সেই সময়কার ছবিগুলি দেখতে চান তাহলে ডেইলী স্টারের ১৯৯৯ সালের ১-৩ আগস্টের ইস্যু আর স্টার ম্যাগাজিনের যেই ইস্যুটা ২ আগস্টের পরে বের হয়েছিল সেটা জোগাড় করতে পারেন। ঐটা আমার কাছেও নাই। কেউ পেলে আমাকে একটা মেইল কইরেন, পাওয়ার উপায়সহ দেঁতো হাসি

২.

টিপাইমুখ বাঁধ নিয়া নানানকম পোস্ট পড়তেছিলাম বিভিন্ন ব্লগপাতায়। সচলায়তনে সমস্যাটা আসলে কী নিয়া এবং সেইটা কী কী ভাবে কতটা ক্ষতিকর হইতে পারে সেইটার আলাপ হইতেছিল। অন্যান্যব্লগের পাতায় দেখলাম এইটা নিয়ে একেবারে সিরাজশিকদারতাজউদ্দিনমুজিব নিয়া ব্যপক টানাটানি শুরু হৈয়া গেছে। খুবই হাস্যকর পরিস্থিতি। কারণ প্রত্যেকেই মূল সমস্যা বাদ দিয়া তার আশেপাশে উদ্দেশ্যহীন ডিগবাজিরেই ব্লগিঙের লাইন বইলা গ্রহণ করছে। বেশীরভাগ গ্রহণ করছে বামজুজুর ভয়ে আল্ট্রারাইট আওয়ামী অবস্থান আর বাকিদের অনেকেই মজহারপন্থী ছাগু অবস্থান। এর বাইরের অবস্থান দেখানোর মতো কাউরে এই মুহুর্তে বাংলাব্লগে উপস্থিত না দেইখা খারাপই লাগলো। ১৯৯৮ সালের শেষে যখন তেলগ্যাস লুঠের বিরুদ্ধে প্রথম রাস্তায় নামা হৈলো, তার প্রথম বা দ্বিতীয় মিছিল থিকাই ছিলাম। ঐ পাঁচ-ছয় জন নিয়াই কিন্তু আমরা রাস্তায় নামছিলাম। বড় বামসংগঠনগুলা মানে সিপিবির ছাত্র ইউনিয়ন আর বাসদের সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট তখনো কীজানিএক্টা ভাবতেছিল। প্রথম মিছিলগুলি আমার ছাত্র ফেডারেশনের ব্যানারেই করছিলাম। এইটাই ইতিহাস। সেই একজন একজন কইরা গণসংযোগের কোন আউটপুট আছে না নাই পরের দশবছরের রাজনীতি পর্যবেক্ষকই ভালো বলতে পারবেন। টিপাইমুখ বাঁধ হইলে প্রথম যারা এফেক্টেড হবে কাজ করলে তো সেইখানে গিয়া তাঁদের মধ্যেই প্রথম প্রচারণা প্রয়োজন। এইখানে একমাত্র অপ্রয়োজন হইতেছে কাঠিবাজি। আর এফেক্টেডদের খুব প্রধাণ অংশই যেহেতু সিলেটের ঐ অঞ্চলের আদিবাসীরা, সুতরাং মুসলিম সাম্প্রদায়িকতাকে ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের সুযোগও সেখানে কার্যত: অনুপস্খিত। সরকারি প্রতিনিধী দল নাকি টিপাইমুখে কিছু দেখেন নাই। অভিজ্ঞতা থেকে জানি সরকারি প্রতিনিধীদলরা ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে মিথ্যা কথাই বলে থাকেন। সেইসূত্র ধরে বামপন্থীদের এইমুহুর্তের কর্তব্য আসলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে আগে গণসংযোগ করা পরে গ্রামসী কপচানো।

খুব দু:খের সঙ্গে জানাচ্ছি এইক্ষেত্রে মধ্যপন্থীদের কর্তব্য অনিচ্ছা সত্ত্বেও বামে হেলে থাকা আর ডানপন্থীদের আজলা ভরে মুড়ি খাওয়া। ইস্যুর অর্ন্তগঠন তাঁর ঝোঁক নির্ধারণ করে। পৃথিবীর কোন ইস্যুই সবার সমর্থন পায় না।

৩.

এদিকে জামাত আর ধর্মীয় মৌলবাদ প্রসঙ্গে সরকারের অবস্থানও প্রত্যাশিতভাবেই ধোঁয়াটে হয়ে আসছে। ভাবেসাবে মনে হচ্ছে সরকার এইবারও এদিকওদিক ধুনফুন করে এই কারণে হয় নাই ঐ কারণে হয় নাই এইসব বইলা পাশ কাটাইতে চাইতেছে। কোন শ্যালকপুত্রই পেটের কথা মুখে আনতে চায় না। খয়রাতি সাহায্য হিসাব করলে সৌদি আরবরে আমরা সোজা পাছা দেখাইয়া চলতে পারার কথা। না পারার একমাত্র কারণ হইতে পারে সৌদ রাজবংশের সাথে আঙ্কেল স্যামের যোগাযোগ। হাসিনা ক্ষমতায় আসার দেড় মাসের মাথায় সৌদি আরব গেছিল। আইসা থিকা যুদ্ধাপরাধী প্রসঙ্গে আর কথা কয় না। ক্যামনে কী? সেদিন আবার দেখলাম গাফফার চৌ কইছে যুদ্ধাপরাধী গো বিচার করতে নাকি আউমিলীগরে আরো কয়েক টার্ম ক্ষমতায় থাকা লাগবো।

পাবলিকরে এতো ভোদাই মনে করেন ক্যান আপনারা?

No comments: