Monday, November 02, 2009

টুকরো টুকরো লেখা ১৫


মিউনিখ থিকা ফিরছি দুই সপ্তাহ হইয়া গেলগা। ছুটির আমেজ গায়ে ল্যাপ্টাইয়া আছে। কিছুতেই ছুটাইতে পারতেছি না। কালকে থিকা আবার একটা ব্যস্ত সপ্তাহের শুরু। কাজ যত বাড়ে কাজের ইচ্ছা তত কমে। এইসবের মধ্যে একেকটা উইকেন্ড একেকটা মুক্তাঞ্চলের মতো। তাও যদি আবার বদ আবহাওয়ায় খাইয়া ফালায় তাইলে ইজি থাকা কঠিণ। গতকালকে সকাল থিকা শুরু হইছে টিপটিপ বৃষ্টি। থামার নাম ভূলেও নেয় নাই। এরকম পরিস্থিতিতে মনমেজাজ খারাপের মাত্রা থার্মোমিটার ফুটা কইরা বাইর হইয়া যায়। তখন ভালো খারাপের মতো প্যারাডক্সগুলি মগজে বান মারতে থাকে। চৈতন্য ধুন্ধুমার ব্রাশফায়ারে ছ্যাতড়াব্যাতড়া হইয়া কৈ কৈ জানি পৈড়া থাকে।

১.

কী কী জানি লিখতে চাইছিলাম, কী কী জানি করতে চাইছিলাম এরকম ভাবতে ভাবতে শেষ পর্যন্ত কিছুই না কইরা আবারো ভুনাখিচুড়ি আর গরুর গোস্ত খাইলাম হরমুজ বিএসসি আর তার ছোটভাই মঞ্জুর মতো। খাইয়া দেখি আরো ফাঁপর লাগে।

টিভি ছাড়লাম। অখাদ্য কোন সিরিয়াল দেখার চেষ্টা করতে গিয়া মেজাজ আরো চড়তে শুরু করলে গেলাম নিউজ চ্যানেলে। সেইখানে তো গত তিন দশকের মধ্যে ইজি হওয়ার মতো কিছু নাই। আগেও মনে হয় ছিল না। কিংবা ছিল ...কৈতারিনা ...

২.

পুরানা সিডিগুলি ঘাঁটি। একটা বা দুইটা বা আধাখান বা সোয়াখান শুইনা পাল্টাই। কোনটাই মনে ধরে না। বিশেষ কইরা ভালো গানগুলি। শেষমেষ হঠাৎ খুঁইজা পাই বহুদিন আগে এদিকওদিক থিকা জোগাড় করা একটা কালেকশান। ক্লাসিক রক-হার্ড রক আর মেটালের পারফেক্ট সমন্বয় করা একটা ব্যান্ডই আছে আমার সংক্ষিপ্ত অভিজ্ঞতা মতে। কোন চিন্তাযোগের বদলে বিক্ষিপ্ত চৈতন্যে অন্যায়ভাবে হইলেও খানিক ফুর্তি যোগ করার মতো সেই ব্যান্ড এসি/ডিসি। অনেকেই শুধু না, আমার প্রতিবেশের প্রায় সকলেই এই গ্রুপটারে বিশেষ অপছন্দ করে। হয়তো সেইটাও আমার প্রায় দুইদশকপুরানা এসি/ডিসি প্রেমের একটা কারণ।

আমার সেই সিডিগুলিতে একেবারে হাই ভোল্টেজ(১৯৭৪) থিকা শুরু কইরা রেজারস এজ(১৯৯০) পর্যন্ত পুরা কালেকশান। ক্যাম্নে কৈ পাইলাম সেই আলাপ অবান্তর। তবে আছে এইটা ঘটনা। জাহাঙ্গীরনগরে থাকতে বলব্রেকার(১৯৯৫) শুনছিলাম। অত মজা লাগে নাই। সত্যি বলতে আমার আসলে এসিডিসির প্রথম ভোকাল বোন স্কটরেই বেশী ভাল্লাগে। ব্রায়ান জনসনও মৌলিক। তবে সত্তর দশকে ওরা সবাই পোলাপান ছিল বইলা ঐসময়কার গানগুলিতে আলাদা মজা।

তো শুরু করলাম একেবারে প্রথম অ্যালবামের প্রথম গান জেইলব্রেক থিকা। শেষে ভিডিও বাইর করলাম ইউটিউবে :



একবার শুনলাম দুইবার শুনলাম তিনবার চাইরবার এরকম কইরা পাঁচ নম্বরের পরে ট্র্যাক পাল্টাইয়া ডার্টি ডীডস ডান ডার্ট চীপ, তারপর লেট দেয়ার বী রক, রক অ্যান্ড রোল এইন্ট নয়েজ পলিউশান, বিগ বলস্, রাইড অন, গার্লস গট রিদম, প্রব্লেম চাইল্ড ... ...অনেক দিন পরে শুধু গান শুইনা রাপু খাপাং !

তারপরে শুরু করলাম ১৯৮১ সালের ব্যাক ইন ব্ল্যাক, যেইটাতে ১৯৮০ সালে বোন স্কট ব্রেইন টিউমারে মারা যাওয়ার পর ব্রায়ান জনসন প্রথম শুরু করে ভোকাল হিসাবে। একে একে য়ূ শুক মি অল নাইট লঙ, নিক অফ টাইম, ব্যাক ইন ব্ল্যাক, দ্যাটস দ্য ওয়ে আই ওয়ানা রক অ্যান্ড রোল, রক ইওর হার্ট আউট, রেজারস এজ'এর মতন মারাত্মক ট্র্যাকগুলি পার হইয়া ইউটিউব ঘাইটা বলব্রেকারের গানগুলা বাইর কইরা শুনলাম। ২০০০ সালে স্টিফ আপার লিপ নামে আরেক্টা অ্যালবাম বাইর করছিল। ঐটা অত ভালো লাগে নাই আগে শুইনা। এইবারও লাগলো না। শুনলেই মনে হয় আমাদের সময়কার হিরোরা সব বুড়া হইয়া গেছে। সেই ধার আর নাই। মাঝে বহুদিন বা বহুবছর এই লাইনের কোন খোঁজ খবর রাখি না। আইজকা এই ইউটিউব ঘাঁটতে গিয়া জানলাম যে ২০০৮ সালের অক্টোবরে আমাগো সময়ের পুরানা গুরুরা ব্ল্যাক আইস অ্যালবামে আবারো ফাটাইছে! শুনলাম প্রথম গানটা। শরিরটা পুরা ঝাঁকি দিয়া উঠলো ১৯৯২-৯৩ তে তেজগাঁও কলেজযূগের মতন। সেই স্বাদ, অ্যাঙ্গাস ইয়াঙের সেই গুল্লি গীটার। কোন হালায় কয় হার্ড রকের দিন শ্যাষ? হার্ড রক আছে ...অন্তত যতদিন এই চিরদিনের স্কুলবয়গুলা আর আমার মতো শ্রোতারা আছে।

এসি/ডিসি'র ভক্ত-অভক্ত-অ্যালার্জিধারী এবং আগে কোনদিন নাম বা গান না শোনা গো উদ্দেশ্যে দিলাম ইউটিউবে পাওয়া এই অরিজিনাল ভিডিওটা ....



যতই গাইল দ্যান একটা কথা মানতে হইবো এরা কোনদিন কারো নকল করে নাই। এরা এমন একটা কায়দায় গান করে যেইটা নকল করা যায় না। খালি শুইনা পচুর আনন্দ কাড়া যায় :D

বোন স্কটের মতো আমারো ধারণা রাক অ্যান্ড রোল এইন্ট নয়েজ পলিউশান ....

No comments: