Wednesday, March 03, 2010

টুকরো টুকরো লেখা ১৯

বাংলা ব্লগিঙে চারবছর একমাসের মতো হতে চলল। প্রথম বছর দেড় ব্লগিং খুব সহজ মনে হতো। মাথায় বা আঙ্গুলে কুড়কুড় করলেই ঠুসঠাস টাইপ করে ফেলতাম। তারপর একসময় মনে হলো এভাবে না। খিয়াল করে লিখতে হবে। ধুনফুন ব্লগের দিন শেষ, দিন বদলের বাংলাদেশ। নাইলে পাঠক ধোলাই দিতে কার্পণ্য করবে না। আস্তে আস্তে দেখি এমনকি ধোলাই খাওয়ার মতো আইডিয়াগুলিও খুলির খানাখন্দকে খাবি খাচ্ছে। আঙ্গুল না চললে মাথা চলে না। মাথা নিজে থেকে কিছু কিছু চলার চেষ্টা করলে আঙ্গুলকে দিয়ে জোর করে এটাওটা নামাই। নামিয়ে মনে হয় এগুলি একেকটা ঐতিহাসিক ভুল। তার উপর আবার বেঁচে থাকার মতো খাইস্টা একটা কাজ করতে বাধ্য হই নিয়মিত। এইভাবেই তৈরী হয় একেকটা ভ্যাকুয়াম। এর সমাধান ব্রহ্মাবিষ্ণু জানেননা এটা নিশ্চিত। জানেন ভোলে বাবা। কিন্তু কৈলাস বহুদূর এবং তীব্বতে ট্যুরিস্ট যাওয়া নিশেধ। তাই গেছোদাদাকে খুঁজতে থাকি। এখনো খুঁজছি।

১.

রাজনীতিতে ভেল্কিবাজীর যূগ চলছে মোটামুটি মিলেনিয়াম তিনেক। বা তার থেকেও কিছু বেশী হতে পারে। অবিরাম তার নমুনাও দেখা যাচ্ছে সর্বত্র। কোথাও একটু লাইন মতো কিছু হতে গেলেই দেখা যায় আমাদের কোন প্রবীণ বিচক্ষণ পূর্বপুরুষ লাইনের কোথাও না কোথাও কমপক্ষে একটা কলার খোসা ফেলে রেখেছেন। কী আর করবো, আমরাও বৃদ্ধসম্মতি নিয়ে পরবর্তী উস্টাগুলি খেতে থাকি।
এরকমই একটা কিছু দেখা গেলো বাংলাদেশে ৫ম সংশোধনী সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাতিল হবার আগুপিছু রাজনীতিতে। ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি বাতিল হবে কিন্তু থেকে যাবে বিসমিল্লাহ এবং রাষ্ট্রধর্ম, আর তার বিগ্রহরূপ ধারণ করবে বিমানবন্দরের সামনে আল্লাহু। কি সাংঘাতিক ভুদাই আমি ! ২০০৮ সালের অক্টোবরে ফেইসবুকে "উই ওয়ান্ট দ্য স্কাল্পচারস ব্যাক" নামে একটা গ্রুপ খুলেছিলাম। আর তাতে সদস্য হয়েছিল আমার মতো দুহাজারের কাছাকছি ভুদাই। আসলেই ভুদাই। এই সময়টা আসলে টেবিলের উপর তরকারিকাটলারিজুতামুজাজাঈঙ্গাগুমুতের প্লুরালিস্ট সমাবেশের। কোন কিছুকে হেজিমনি হতে দেওয়াই ফেসিবাদ। তাই সংবিধানে সাম্প্রদায়িকতাও থাক আবার ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের ঝাড়িপট্টিও থাক। অসুবিধা কী? সেকুলারিজমে তো আর পেট ভরবে না! আর দেখুন সাম্প্রদায়িকতা কি চমৎকারভাবে পেট্টা ভরিয়ে বিস্ফোরণমাত্রায় নিয়ে এসেছে। তেমন খারাপ লাগার কিছু নাই। সবুজ বাঘের মতো নিজেকে প্রশ্ন করি, ভুদাই হওয়া কি খারাপ?

২.

খাগড়াছড়িতে আবার বর্ণদাঙ্গা। আবারো সেটলারদের সমর্থনে সেই জলপাই। এরকম আগেও হয়েছে। আমাদের পূর্বপুরুষের কেউ কেউ এট্টুআট্টু প্রতিবাদের অভিনয় করে তেলেজলে মিশে গেছেন। আমরাও গেছি। তোমরা ছোটরাও যাচ্ছো। ভবিষ্যের প্রতি অক্ষম মিনতি করে বলি, আপনাদের আর তোমাদের মতো তোরা ঐভাবে মিশিস না। আমি জানি তোরা পারবি।

৩.

আগের পোস্টে বলছিলাম পিসির সামনে বসে লাফটার শো দেখে মুখে একটা হাসি মতোন আনার চেষ্টার কথা। আমার জানা সব ভাষাতেই দেখি এই শো গুলি পলিটিক্যাল স্যাটায়ারে ভর্তি। অনেকদিন আগে অন্য কোথাও এক পরহেজগার বালিকা বলেছিল, স্যাটায়ার সবসময় বামপন্থী কেন হয়। ব্লগীয় পরিভাষায় নি:সন্দেহে সেটা একটা ছাগুপোস্ট ছিল। তারও কারণ হচ্ছে তিনি সেটা লিখেছিলেন একেবারে ডানপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। কিন্তু তাঁর প্রশ্নটা সঠিক। বামপন্থীদের নিয়ে নির্মমতম স্যাটায়ারগুলিও কোন না কোনভাবে বামপ্রান্ত থেকে আসে। সোভিয়েতস্কি কৌতুকভ পড়ুন বা চন্দ্রবিন্দুর চন্দ্রিলের লেখা গানগুলি শুনুন। সেগুলি আর যাই হোক দক্ষিণপন্থী না। ডান বা মধ্যডান অবস্থান থেকে যা দুয়েকটা শোনা যায় ( আসলেও যায় কি?) সেগুলি মর্মান্তিক। আমি আসলেও এখনো সেইভাবে কোন ডানপন্থী স্যাটায়ার শুনি নাই বা দেখি নাই। কালকে শুতে যাবার সময় চোখ বুঁজে কিছুক্ষণ ভাবার চেষ্টা করলাম একটা ডানপন্থী লাফটার শো'র কথা। সেখানে অ্যাঙ্করিং করছেন কোন সিদ্ধ পুরুষ। কোন আলালের ঘরের দুলাল বলছে এরকম একটা কৌতুক :

একবার ওভার সীজ জার্নিতে নিউলি ম্যারিড এক ক্যাপ্টেন শীপে উঠেছেন। জাহাজ চলতে শুরু করেছে। এর মধ্যে হলো কি ক্যাপ্টেনের বৌ'এর চোখ পড়েছে একটা খালাসীর দিকে। সে তার হাবিকে খাঁমচে ধরে বলে কি, ও মাই লুক অ্যাট জ্যাট! খালাসীটার প্যান্ট ছিঁড়ে বাট দেখা যাচ্ছে! হিহিহিখিকখিকখিক্ !

পুরো হল কাঁপিয়ে তুমুল করতালি!

No comments: