Tuesday, March 30, 2010

খুব খিয়াল কৈরা!!!!!!

মানসিক প্রস্তুতি ছিল "নিয়মিত লেখা আর ব্লগের লেখা" নামে আমার প্রাগৌতিহাসিক একটা খেলাপি সিরিজকে শ্মশাণ থেকে টেনে তুলবার। পরে মনে হলো আরো কিছু কথা বিশেষ করে সচলায়তন নিয়ে কিছু কথা বলতে পারলে ভালো হয়, মানে আমার ভালো লাগে আর কি। ব্লগের একটা খুব বড়ো সুবিধা হচ্ছে কেন লিখছি কার জন্য লিখছি'র বিবেচনাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ফটাশ করে ইচ্ছে মতন কোন কথা নামিয়ে ফেলা যায়। কোন প্লাটফর্মে লিখছি সেটা অবশ্যই মনে রাখতে হয় যেহেতু জ্ঞানত বর্ণান্ধ নই। যা লিখতে চাই বা বলতে চাই, নিজের ব্যক্তিগত ব্লগের বাইরে সেটা শুধুমাত্র সচলায়তনেই বলতে পারি। তাই সচলে লিখি। সচলায়তনের সাথে চৈতন্যগত ঐক্যের এই জায়গাটাই সচলে আমার ধুনফুন লিখে যাবার প্রধাণ কারণ। এর থেকে বেশী যোগ্যতার দরকার নাই।

সচল অনিকেতের পোস্টে হাসান মোরশেদ যেমন বললেন তারই একরকম পুনরোক্তি করে বলছি সচলায়তন মোটেও অন্যকোন কমিউনিটি ব্লগিং প্লাটফর্ম ভেঙে জন্মায় নাই। সেযুগে একটাই বাংলা-ব্লগিং প্লাটফর্ম ছিল নেটজগতে। প্রথমেই সেখানে সরাসরি ধর্মীয় মৌলবাদের সাথে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরী হয়, যেটা মৌলবাদীদের জামাত-হিজবুত'কে আকড়ে ধরার প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক চেহারা পায়। রাজনৈতিক চেহারা আসলে যেকোন ধরণের সংঘাতেই থাকে। সেটা কোন সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পক্ষে হতেই হবে এমন না। সেখানে জামাত-হিজবুত ধর্মীয় মৌলবাদের আইকন হিসাবেই ধর্মীয় মৌলবাদ বিরোধীদের প্রতিপক্ষ হয়েছে। মৌলবাদের স্বরূপ উদ্ঘাটনে বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন জামাত-মুসলীম লীগ-নেজামে ইসলামী'র ভূমিকা সব থেকে শক্তিশালী অস্ত্রগুলির একটা। আর এটাকে অস্ত্রে পরিণত করার ব্যাপারে সব থেকে বেশী সহায়ক ভুমিকা মৌলবাদ সমর্থক ব্লগাররাই পালন করেছেন। তাঁরা ক্রমাগত তাঁদের অতীত কালিমাকে কখনো অস্বীকার করে কখনো তাকে ডিফেণ্ড করতে অন্য আরো কেউ কেউ কী করেছেন না করেছেন তার ফিরিস্তি দিতে থাকেন। মরতেদম জামাত-হিজবুতদের খুব বড়ো আর একটা দূর্বলতা ছিল তাঁদের মধ্যে পাতে দেবার মতো লেখকের সর্বাত্মক অনুপস্থিতি। সুতরাং সংঘাতের চেহারা খুব বেশী সময় কূটনৈতিক শিষ্টতা বজায় রাখতে পারে নাই। অশিষ্ট আক্রমণ প্রথম মৌলবাদ সমর্থকদের মধ্য থেকেই আসে। "বিপরীতের ঐক্য এবং সংগ্রাম" এর বহু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও চলমান রাজনীতিতে এর প্রকট উপস্থিতি প্রসঙ্গে কট্টর মার্কসবাদ বিরোধীরাও খুব একটা উচ্চবাচ্য করেন না। বাংলাভাষার প্রথম ব্লগ পাটাতনেও তার উদাহরণ যথেষ্ট প্রকটভাবে দেখা দিলো। ধর্মীয় মৌলবাদের বিরোধীতায় সেইসূত্রে উদারপন্থী, জাতীয়তাবাদী, পুরাবাম, আধাবাম, সোয়াবাম, পৌনেবামরা ঐক্যবদ্ধ হন বা হতে বাধ্য হন। পরিস্থিতিটা এমন দাঁড়ায় যে ধর্মীয় মৌলবাদবিরোধী সংঘাতের শিষ্টঅশিষ্ট সবরকমের অনুশীলনের কারণে বাংলাব্লগারদের নিজস্ব স্বাভাবিক ব্লগিঙের ঐ প্লাটফর্মে আর কোন উপায় থাকে না। সুতরাং বাংলাব্লগিঙের সেই প্রথম প্লাটফর্মের মনোপলি ভেঙে যাওয়া অনিবার্যই ছিল। কোন একটা বা একগুচ্ছ বিষয়ে মতৈক্য ছাড়া কোন ধরণের প্লাটফর্মেরই জন্ম হয় না। "স্বাভাবিক লেখালেখির পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে সেখানে ছাগু-বরাহদের অনুপস্থিতি ফরজ" এইটা সচলায়তনের জন্মের খুব প্রধাণ ডিরেক্টিভ প্রিন্সিপল। আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণে সচলায়তনের জন্মের ইতিহাসের এটাই মর্মার্থ।
সচলের জন্মের পরে প্রথম যুগে উত্তরাধুনিকতার মুখোশ পড়া মৌলবাদের সুশীলরক্ষকদের সাথে দ্বন্দ্বের পরিস্থিতি আসে। এর পরিণতিতে সেই সুশীল রক্ষকরাও কালক্রমে সচলে অপাঙতেয় বিবেচিত হন। এইসব সুশীলদের অনেকেই সুলেখক। কিন্তু আক্রান্ত হলে আত্মরক্ষার কায়দায় এঁদের ছাগুরূপ বেরিয়ে আসে। সচলায়তনে লিখতে হলে লেখার মান, বিষয়বস্তুর গভীরতা এই বিষয়গুলি খুব গুরুত্ব নিয়ে বিবেচ্য। সুতরাং এই সুশীলতার মুখোশ পড়া ছাগুদের অনুপ্রবেশ সরাসরি সব সময় ঠেকানো সম্ভব হয় না। আশার কথা খানিক লাড়ালাড়ির পরেই এঁদের অন্তর্বাস খুলে লেজ বেরিয়ে যায়। এক্ষেত্রে লাড়ালাড়ির বিকল্পপন্থা এখনো আবিস্কৃত হয় নাই। সুতরাং কারো লেখায় ধোঁয়াপন্থা দেখা গেলে সংখ্যাগরিষ্ঠ সচলরা তাকে লাড়বেন এটাই স্বাভাবিক। এইসব দার্শনিকদেরকে আমি ব্যক্তিগতভাবে সচলে প্রবেশের সময় ইস্পাতের জাঙ্গিয়া পড়ে প্রবেশের পরামর্শ ছাড়া আর কিছু দিতে পারছি না। ধর্মীয় মৌলবাদী এবং যেকোনভাবে মৌলবাদের প্রতি সহানুভুতিশীল যেকোন কারো জন্য আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণে সচলায়তন একটা ডেঞ্জারজোন। আর সেটা আছে বলেই সচলায়তনে আমি এবং আরো অনেকে আছেন।
ছাগুদের সক্রিয় অনুপস্থিতি লেখালেখির পরিবেশ নিশ্চিত করে এই কথা সচলায়তন প্রমাণ করেছে বলেই মনে করি। যারা সচলে আসেন তারা এই পরিবেশের আকর্ষণেই আসেন। ছাগুবান্ধব কারো কাছেও এই পরিবেশ আকর্ষনীয় হতে পারে। সেক্ষেত্রে তাঁদের পরামর্শ দেবো অনিবন্ধিত নিরব পাঠক হিসাবেই সচলাগমণ করতে। পৃথিবীটাতো অনেক বড়ো। ছাগুগন্ধী-কাঠিবাজীকে মৌলিক অধিকারজ্ঞান করলে তার জন্য আপনার জন্য পড়ে আছে নেটজগতের অবারিত প্রান্তর। সেখানে অনেক ঘাস অনেক কাঁঠাল পাতা আরো অনেক নাম না জানা ছাগখাদ্য সুপ্রচুর মজুদ আছে।

অতএব খিয়াল কৈরা ..... খুউব খিয়াল কৈরা!!!!!!

No comments: