Wednesday, December 29, 2010

টুকরো টুকরো রেসিপি

খাওয়া বন্ধ না হওয়ায় রান্নাও বন্ধ হয় না। কারণ তৈরী খাবারে সময় বাঁচলেও পয়সা বাঁচে না। আবার ঘরেও মন মতো এইটা সেইটা করতে গেলে সবসময় পকেটের সাথে  ঘড়ির সাথে ম্যাচ করে না। সুতরাং পয়সা আর সময় বাঁচে আবার জিবলাও খুশি থাকে এরকম কিছু রেসিপি আবিস্কার করা আমার মতো সর্বহারার জন্য বিপ্লবের মতো না হইলেও অন্তত লেবার ওয়েলফেয়ার অফিসারের সদ্যকেনা মার্সিডিজে ইটা মারার মতো ফরজ। সেরকমই দুইএক্টা পোস্টাইলাম। আসলে খুব সিরিয়াস কিছু লিখতে চাইছিলাম। কিন্তু আঙ্গুল কী-বোর্ডে লাগাইতে পাইলো খিদা। রান্না নাই ঘরে। যা আছে সেগুলা রান্তে কমপক্ষে দেড়দুই ঘন্টা লাগবো। তারপর বানাইলাম এই পোস্টের প্রথম রেসিপিটা। পরের রেসিপিটাও এই ধরণের পরিস্থিতির জন্য। তবে দেশী বাস্তবতায় মনে হয় এগুলা সবসময় কামে লাগবো না। এইসব রেসিপি কামে আইবো নি:সঙ্গ প্রবাসীদের মধ্যে বিশেষভাবে তাঁদের যারা ইতোমধ্যেই নীতিগতভাবে যষ্মীন দেশে যদাচার মাইনা নিছেন।


১.

 ডিমালুভর্তা দিয়া শুয়োরের গোস্তভাজা


এইটার জন্য বাড়িতে যেগুলা থাকা দরকার :


১. ম্যাশড পটেটো অর্থাৎ আলুভর্তার গুড়া
২. পিঁয়াইজের গুড়া
৩. কাঁচা মরিচ (অপশনাল)
৪. নুন
৫. সয়াবিন তেল (সূর্যমুখী হৈলে ভালো হয়)
৬. হাড্ডি ছাড়া শুয়োরের কান্ধের গোস্ত ( কিছুটা চর্বি থাকলে ভালো হয় )
৭. এট্টুসখানি ভিনেগার
আর বাড়ির বাইরে ঠান্ডা থাকাটাও জরুরি। মাইনাস পাঁচ থিকা শুরু কইরা যত নিচে যাইবো তত ভালো।

একমাত্র শুয়োরটাই আজকে বিকালে ছিলো না। বাইরে মাইনাস সাড়ে দশ। অ্যাস্ট্রোনট সাইজা বাইর হইলাম। অচ্ছুৎ বলাইয়ের আগের বাসার নিচতলার রুশ দোকানটা তাজা মাছ, শুয়োর আর ভদকার জন্য কাসেল বিখ্যাত। দোকানে ঢুইকাই দেখি হাড্ডি ছাড়া শুয়োরের কান্ধের গোস্তে আনগেবট অর্থাৎ অফার। দুইটাকা চৌত্রিশ পয়সা কেজি। হাফ কেজির মতো কিনলাম।
বাসায় আইসা প্রথমে শুয়োরের গোস্তরে স্টেকের সাইজে কাটলাম খুব খিয়াল কৈরা। পুরাপুরি না হইলেও মোটামুটি হইলো। তারপর একটা বাটির মধ্যে ৩/৪ চিমটি নুন আর ৫/৬ ফোঁটা ভিনেগার দিয়া মাখাইয়া থুইয়া দিলাম। এইবার একটা বাটিতে এক ঠোঙ্গা ম্যাশড পটেটো ঢাল্লাম। তাতে দেড় চাচামুচ নুন । এক চাচামুচ পিঁয়াইজের গুড়া । তিন্টা কাঁচামরিচরে আশ্রাফুল মনে কইরা কুঁচিকুঁচি কইরা ঐগুড়ার লগে মিশাইলাম। এইবার ১/৪ লিটার ফুটানো পানি দিয়া টেবিল চামুচ দিয়া খিয়াল কইরা লাড়া দিতে দিতে আড়াই মিনিটের মধ্যে আলুভর্তা ৯১% রেডি। এইবার একটা তাওয়ায় দুই টেবিল চামুচের মতো তেল দিয়া গজব তাপে গরম করেন তিন মিনিট। তারপর ৬০% এ মিনিট খানেক রাইখা তারুপর এক এক কইরা দুইটা স্টেক মতো দেখতে শুয়োর ছাড়লাম। এইবার একটু মুচরামুচরি কইরা আড়মোড়া ভাইঙ্গা ফ্রিজ কোঁৎ কোঁৎ কইরা পেগ দুয়েক আনগেবটের ভদকা মাইরা দিলাম। মাইনাস দশ তাপমাত্রায় ভদকা জিনিসটা কেমন যেন নিরাসক্ত নিস্পৃহ আচরন করে। মনে হয় বোতলটা হাই তুইলা কইতাছে, খা খা আরো খা। কোন লাভ নাই। ঠাণ্ডা যা লাগার লাগবোই।
মিনিট পাঁচ পরে স্টেক উল্টাইয়া দিলাম। দিয়া টের পাইলাম প্রকৃতি ইয়াদ করছে। ঠিক ঠাক মতো খালি হইয়া আইসা দেখি সূর্যমুখী তেলের রঙ শুয়োরের চর্বির সাথে মিশা সোনালী হইয়া গেছে। এইবার একটা থালে একটা একটা কইরা স্টেকগুলা নামাইয়া ঐ তেলেই আলুভর্তা ছাইড়া দিলাম। তারুপর দুইটা ডিম। এইবার গজব লাড়ালাড়ি। আড়াই থিকা পৌনে তিনমিনিটে ঘটনা শেষ।



যারা শুয়োর খান তারা টেরাই মার্তারেন। ভালো লাগার সম্ভাবনা ৯৬%। বাকি চাইর পার্সেন্ট ব্যাকাপ রাখলাম।

গুটেন আপেটিট !

২.
আটার রুটি দিয়া লণ্ডভণ্ড

তুর্কি দোকানে ৬৫% আমাগো আটার রুটির মতো দেখতে/খাইতে একরকম জিনিস পাওয়া যায়। আকারে অবশ্য অনেক বড়। ঐটা বাসায় থাকলে ধুমধাম গোটাদুই ডিম ভাইজা একবেলা পার কইরা দেওয়া যায়। কিন্তু শুধু ডিমে তো মন মানে না। তাই এট্টু কায়দা কইরা ডিমের উপর এট্টা অন্যকিছুর ক্যামোফ্লেজ চাপানো লাগে।
এই জিনিসটা অবশ্য জাহাঙ্গীরনগরে থাকতেও খাইছি। ডেইরি গেটে রাজ্জাকের হোটেলে আফজল নামে এক লোক কাজ করতো। চেহারায় এট্টুআট্টু ডিপজল ভাব ছিলো। আমরা ফোলাফোলা চোখমুখ নিয়া বেলা দশটার দিকে ডেইরিতে গেলে আফজল আমাদের জন্য পার হেড এক হাফ কইরা লণ্ডভণ্ড নিয়া আসতো। আমরা বাড়িমারা পরোটা দিয়া গপ্ গপ্ কইরা খাইতাম। এইটা হইলো ১৯৯৮-৯৯এর কথা। সেইসময় ডিপজলের হিট ছবি লণ্ডভণ্ড আর ধর।
যাই হোক। স্মৃতি খুব খাচ্চর জিনিস। একবার খাউজানি শুরু করলে খাউজাইতে খাউজাইতে নব্বই দশকের শুরুর দিকের বলাকার সামনের ফুটপাথে যায় গা। সেইটারে পোল্ভোল্ট মারাইয়া দুইহাজারদশে আন্তে এট্টুও ভাল্লাগে না। আন্তে বাধ্য তাই আন্তে হয়।
লণ্ডভণ্ডের জন্য লাগবো গোটা দুইতিন বা চাইরটা ডিম। টেনিস বল সাইজের একটা বা গল্ফের বল সাইজের দুইটা বেশ রসালো টমেটো। পিংপং বল সাইজের একটা পিঁয়াইজ আর রেগুলার সাইজের ৩/৪টা কাঁচামরিচ। পিয়াইজ আর মরিচ নৃশংসভাবে কুচি করেন। এইবার দেন দুইটাবাতিন্টাবাচাইরটা ডিম। তারুপরে টমোটোগুলারে নিঠুরদরদীর মতো চটকান। মনে রাখবেন এই অশ্লিলতার মাত্রার উপরই লণ্ডভণ্ডের সোয়াদ নির্ভর করে। এইবার চাচামুচের একচামুচের কাছাকাছি লবণ দিয়া রাবণঘুটা দেন। তারপর তাওয়ায় তেল দিয়া চুলার জ্বাল চ্যাতাইয়া দেন। মারাত্মক গরম তেলের মধ্যে এতোক্ষণ যা ফেটলেন সেইটা ছাইড়া দেন। তারপর অশ্লিলভাবে লাড়তে থাকেন। তিন মিনিটের মধ্যে রেডি লণ্ডভণ্ড।
এইবার চুপচাপ আটার রুটি দিয়া মাইরা দ্যান। একদেড়বেলা থাকবো প্যাটে।

এরকম ফকিরা রেসিপি আরো আছে তয় আইজকার মতো এইদুইটাই।

খাইতে খাইতে আরো এক্টা বহুপরিচিত গান শুনেন ....




1 comment:

hedaet said...

www.hedaet.com -বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও তথ্য ভাণ্ডার
১. ফোরাম: আপনি যে কোন লিখা বা বিজ্ঞপ্তি (পাত্র-পাত্রী, বন্ধুত্ব, চাকুরী, কাজ চাই, নিউজ, খেলা-ধুলা, বাড়ী-ভাড়া)প্রকাশ করতে পারবেন ফ্রিভাবে।
২. কমেন্ট শো: www.hedaet.com-সাইটের হোম পেজেই কোন মন্তব্য লিখলে তাৎণিক দেখা যায়।
৩. লিঙ্ক ডিরেক্টরী: ষাট ক্যাটাগরীতে প্রায় ২০০০০ (বিশ হাজার) ওয়েব সাইটের ঠিকানা পাবেন।
৪. Translate / অনুবাদ: আপনি সেকেণ্ডের মধ্যে প্রতি পৃষ্ঠা ইংরেজী/আরবী থেকে বাংলা বা যেকোন ভাষায় অনুবাদ করতে পারবেন।
৫. সার্চ বক্স: গুগল, ইয়াহুর মতো রয়েছে আমাদের সার্চ বক্স। বিশ্বের যা কিছু খুজতে চান, সেকেণ্ডের মধ্যে খুজে পাবেন।
৬. ফেসবুক: এ সাইট থেকেই ফেসবুকের লাইক বাটন ইউজ করতে পারবেন।
৭. অনলাইনে আয়: আনলাইনে আয় আমাদের ফোরামে ধারাবাহিকভাবে জানতে পারবেন।
৮. আপনার ওয়েব সাইট ফ্রি যোগ করা: আমাদের ডিরেক্টরীতে আপনার পছন্দ য়ে কোন ওয়েব সাইট যোগ করতে পারবেন ফ্রি ভাবে।
৯. আমাদের হোম পেজেই ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবেন।
১০. আগামী দশ দিনের আবহাওয়ার তথ্য জানতে পারবেন।
১১. অন্যান্য: হেদায়েত ডট কম সাইটে ফ্রি ম্যাসেজ, ফ্রি ফ্যাক্স পাঠানো, লাইফ স্পোর্টস ও মুভি দেখার লিঙ্ক সুবিধা পাবেন। আমাদের ফোরাম পড়ে জানতে পারবেন, কোথায় নতুন প্রযুক্তির কৃষিযন্ত্র পাওয়া যায়, বিনা পয়সায় ইন্টারনেটের গতি কি করে বাড়াবেন, ইন্টারনেটে বাংলা কি করে লিখবেন, মোবাইলে বাংলা লিখা দেখার নিয়ম, বাংলাদেশে কোথায়-কোথায় কর্মসংস্থানমূলক ট্রেনিং; দেয়া হয়, তার ঠিকানা; বাংলাদেশের সকল পোষ্ট কোড নম্বর; র‌্যাব-পুৃিলশ, হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিসের জরুরী কয়েক হাজার টেলিফোন নম্বর; স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক জরুরী কথা, বাংলাদেশের কোথায়-কোথায় ফ্রি সেবা দেয় তার ঠিকানা, কম্পিউটার ও সফটওয়ার বিষয়ক জরুরী বিষয়গুলো; বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির খবর, গুণীজনদের জীবনী; কিভাবে ওয়েব সাইট খুলতে হয়; ঢাকার ভিখারুন্নেছা নুন স্কুল ও রাজশাহীর সাফল্য কোচিংয়ের প্রথম শ্রেণী ভর্ত্তি গাইড ফ্রিভাবে পড়তে পারবেন, এমন দেশী-বিদেশী বহু তথ্য পাবেন সম্পূর্ণ ফ্রিভাবে। আমাদের সাইটের মাধ্যমে ইমেইল একাউন্ট অচিরেই খুলতে পারবেন। অনলাইন লাইফ টিভি চ্যানেল খোলার প্রচেষ্টাও রয়েছে। প্রতিদিন আমাদের সাথে থাকুন, মতামত দিন কমেন্ট বক্সে, www.hedaet.com -এর ফোরাম পড়লে আপনার জীবনের জরুরী বিষয়গুলো জানতে পারবেন।
১২. এস.ই.ও.- যেকোন ওয়েব সাইট প্রচারের জন্য আমাদের রয়েছে, ২০০০ ডু ফলো লিঙ্ক, ২০০০ ডিরেক্টরী, ২০০০ ফোরাম এর লিঙ্ক।