Saturday, January 31, 2015

টুকরো টুকরো লেখা ২৬

না লিখতে না লিখতে একসময় লিখতে পারাটাই থমকে যায়। বয়স বাড়তে থাকে। ক্রমশ বিষয়টা একদা লিখতাম পর্যায়ে চলে যায়। মাঝে মাঝে নিজের আর "নিজ সময়ের" বাকিদের পুরনো পোস্টগুলি দেখি। প্রতিটা মানুষেরই একটা নিজ সময় থাকে। মূল্যবোধগুলি কোন না কোনভাবে সেই সময়ের মূল্যবোধে বন্দি হয়ে যায়। নিজের সময়কাল অতিক্রম করে যাওয়ার মেধা সবার থাকে না। রবিবুড়ো অনেক চেষ্টা করে অনেকদূর এগিয়ে ছিলেন। বাকিরা তার এক-চতুর্থাংশও পারে নাই। আমি ঐ বাকিদের পঞ্চমবর্গের লোক। দাঁতগুলি স্মৃতির জাবর কেটে তুলনামূলক স্বস্তিতে থাকে।
বছর দুই হতে চলল ব্লগে ফিরবো ফিরবো করছি। ফেইসবুক বন্ধ করেছি বেশ কয়েকবার। যথারীতি কয়েকদিন পরে ফের খুলে বসেছি। আন্তর্জালে দেওয়া সময়ের প্রায় পুরোটাই ফেইসবুক খেয়ে ফেলেছে। শেষ পর্যন্ত একবার দুইবার ঊঁকি দেওয়া ছাড়া ব্লগের সাথে সম্পর্ক থাকে নাই। এটা রীতিমতো সিগারেট খাওয়া পর্যায়ের পাপ। ঘোরতর অন্যায় জেনেও অনবরত চালিয়ে যাওয়া। অথচ ফেইসবুকের আবেদন পড়তির দিকে। অমুকতমুক অ্যাপ্লিকেশানের কাছে তার পরাজয় অবধারিত। ভালোভাবে হোক খারাপভাবে হোক ব্লগই টিকে থাকবে। কারণ ব্লগ লেখার জায়গা। ফেইসবুক গং ফোড়ন কাটার জায়গা। ব্লগে ফিরতে হবে। বাজে, বিরক্তিকর, চর্বিতচর্বন যা হাতে আছে তাই নিয়ে ফিরতে হবে। আজ থেকে নয় বছর আগে যদি শুরুটা করে না ফেলতাম তাহলে হয়তো এই ফেরার ফেউ পেছনে লাগতো না। এসেই যখন পড়েছি, দিনের শেষে আমার পরিচয় ব্লগার।
১.
বিশ্বরাজনীতি টালমাটাল। কোন নতুন মেরুকরণ স্পষ্ট না এই মুহুর্তে। তবে মেরুকরণের পূর্বরাগপর্ব চলছে এটা নিশ্চিত। রাশিয়া প্রসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষমতাসীন সরকারগুলি ন্যাটোর সাথে দৃশ্যত একমত হলেও অভ্যন্তরীন রাজনীতিতে মতদ্বৈধতা প্রকট। গ্রীসে ডানপন্থীবাম ক্ষমতায় বসায় সব থেকে খুশি যুক্তরাষ্ট্র-বৃটেন। কারণ তাতে ইউরোর শ্রাদ্ধ হবার একটা সম্ভাবনা উজ্জ্বল। যথারীতি বাংলাদেশের বামাতিদের মধ্যেও একটা খুশি খুশিভাব। আমার নাকে আসছে গ্রীক পলপটের গন্ধ। বিরাশি বছর আগে জার্মানীতে এনএসডিএপি'র আগমনেও তাঁরা একইভাবে প্রীত হয়েছিল। একেবারেই জামাত-মুসলিম ব্রাদারহুড-তালেবান/আল-কায়েদার ফর্মূলায় আইএস। সম্ভাব্য হিটলারের ভূমিকায় এর্ডোগান। ভারতে শক্তিশালী মার্কিনপন্থী ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ। অবশ্য মার্কিন বিরোধি ফ্যাসিবাদ আদৌ আছে কী না সেটা তর্কসাপেক্ষ। ছোট ছোট আঞ্চলিক দ্বন্দ্বগুলির নানামুখী মিথ:স্ক্রিয়া ১৯৪৫ থেকে চলতে থাকা অভ্যস্ত হিসাবনিকাশে মিলছে না। কী হবে না হবে বলতে পারবো না। চার্চিলের মতো করে বলতে পারি "ঝড় আসছে"।
২.
বহুবছরের মধ্যে ভালো খবর বলতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়ে রায় এবং রায় কার্যকর হতে শুরু করা। আদালতের কাজ সম্পর্কে বাইরে থেকে কিছু বলার নাই। তবে গতির সঙ্গে রাজনৈতিক লাভ/ক্ষতির একটা সম্পর্ক থাকেই। কাদের মোল্লার মামলা যেভাবে ২০১৩র মধ্যে নিষ্পত্তি হলো, বাকি মামলাগুলিতে সেই গতি দেখা যাচ্ছে না। দেখা গেলে ভালো হতো।
৩.
জার্মানীতে পেগিডা (পাট্রিওটিশে অয়রোপেয়ার গেগেন ইসলামিযিয়েরুঙ ডেস আবেণ্ডলাণ্ডেস) অর্থাৎ সূর্যাস্তভূমির ইসলামীকরণ বিরোধি দেশপ্রেমিক ইউরোপীয়বৃন্দের লাফালাফি ক্রমশ কমে আসছে। এই হেফাজতে ক্রিশ্চিয়ানিটির উগ্রডানপন্থী নেতারা একে একে পাততাড়ি গুটাতে শুরু করায় আশা করা যাচ্ছে খুব দ্রুতই এর পরিণতি পীরাটেন পার্টাই (Piraten Partei) এর মতো হবে। বিশেষত এই সপ্তাহে লাইপৎসিগে পেগিডার সমাবেশ সুপারফ্লপ করায় ভালো লাগছে। যেটা চোখে খুব আটকাচ্ছে তা হলো শুরু থেকেই পেগিডার সমাবেশের বাইরে পেগিডা-সমর্থকদের প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণে পেগিডা বিরোধিদের প্রতিরোধের কথা অজার্মান মিডিয়াতে খুব কম বা প্রায় না আসা। অভিবাসীদের কাছে প্রগতিশীল/উদারপন্থী জার্মানদের আড়াল করায় কার স্বার্থ উদ্ধার হচ্ছে? স্যাম চাচার? হোলেও হোতে পারে।
৪.
এমপিথ্রি থেকে ভিনুইলপন্থী হবার পর থেকে আরো বেশি করে টের পাচ্ছি বয়স হচ্ছে। ক্রমশই সরে যাচ্ছি জাজের দিকে। বিষন্ন দিনগুলিতে টাটকা বাতাস এনে দিচ্ছে গ্লেন মিলার কিংবা সাচিমো'র ট্রাম্পেট। ভূল করে হলেও ভাবতে ভালো লাগে, পৃথিবীটা কোন মিডিয়ার সৃষ্টি না, আসলেই সুন্দর।
এখানে গানের কথাসহ

1 comment:

Kafy said...
This comment has been removed by the author.