Monday, March 23, 2015

টুকরো টুকরো লেখা ২৮




মাঝে দুএকদিন আবহাওয়া আর ক্রিকেট বাদে গত দুই মাসের পুরোটাই একঘেয়ে বিরক্তিকর। মেঘলা আবহাওয়া, বিবৃতিভিত্তিক রাজনীতি, পেট্রোলবোমায় মানুষ পুড়িয়ে মারা, বইমেলার পথে লেখক খুন, বিশ্বরাজনীতিতে গুমোট এই সবের কিছুই নতুন না। পরিবর্তনের কথা ভাবতেও ভুলে গেছি।
১.
বিএনপি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আসতে নিমরাজি। নির্বাচন এপ্রিলে। নির্বাচন করতে গেলে হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহার করতে হবে। সেইক্ষেত্রে গত পৌনে তিনমাসের মানুষ পোড়ানো আন্দোলনের কী হবে? ঢাকা-চট্টগ্রামের বাইরে হরতাল-অবরোধ অব‌্যাহত রেখে নির্বাচনের একটা সম্ভাবনার কথা অনেকের মাথায় আসছে। তাতে কি ভোট পাবার কোন সুবিধা হবে বিএনপি-জামাতের? হতেও পারে। ধরলাম ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ আর চট্টগ্রাম তিন সিটি কর্পোরেশনেই বিএনপি-জামাত প্রার্থী জিতে গেল। তাতে সাধারণ যুক্তিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি বিএনপি-জামাতের আস্থা প্রমাণিত হবে। নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থাই যদি থাকে তাহলে গত তিনমাস ধরে দেড়শ-দুশো মানুষ পুড়িয়ে মারার মানে কী?
২.
সচেতনভাবে বাংলাদেশের ক্রিকেট দেখছি আশির দশকের শেষার্ধ থেকে। সেই যখন জাহাঙ্গীর শাহ বাদশা, গোলাম ফারুক সুরু, গোলাম নওশের প্রিন্স, গাজী আশরাফ লিপু, আসাদুজ্জামান মিশা, দীপু রায়চৌধুরীরা খেলতেন। তখন কোন আন্তর্জাতিক খেলায় দলীয় স্কোর একশো আর বিপক্ষের গোটা চারপাঁচ উইকেট নিতে পারলেই একধরণের সন্তুষ্টি পাওয়া যেতো। তারপর তিন দশক পেরিয়ে বাংলাদেশ এখন টেস্ট খেলে। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালও খেলে। পৃথিবীর কোন দলকে বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেয় না। গত তিন দশকের ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে আমি আশাবাদী। এই ঘোরতর অন্ধকার সময়ে ক্রিকেটেই কিছুটা আলো দেখি।
৩.
দুই বছরও পার হয় নাই সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের নেতৃত্বাধীন বাথ পার্টি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ন্যাটোর প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় আইএসকে গড়ে তোলা হয়েছে। তারা সিরিয়া-ইরাকের বিস্তৃত এলাকা দখল করে সেখানে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে তার ভিডিও ইন্টারনেটে তুলে দিচ্ছে। ন্যাটোর মাতবর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন আইএসের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কুমিরের মতো কাঁদছে। এখন তারা আসাদের সাথে বসতে চায়। অথচ অতি নিকট অতীতেই এই বাশারকে সরাতে তারা বিমান হামলা পর্যন্ত করতে চেয়েছে। পারে নাই রাশিয়ার জন্য। তারপর শুরু হলো ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার সাথে যুদ্ধের হুমকি ধামকি। রাশিয়া বা চীন কারো সাথেই যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি যুদ্ধ হবে না। অন্তত যতদিন স্ট্র্যাটেজিক মিসাইলগুলি আছে ততদিন। সেটা যুক্তরাষ্ট্র-বৃটেন খুব ভালোই বোঝে। সুতরাং জ্বালানীশক্তির উৎস আর বাজার দখলের যুদ্ধের পথই খোলা থাকে। এই অন্ধকারে মাঝে মধ্যে এক আধ ঝলক আলো দেখা যায় কুর্দিস্তানের স্বাধীনতা যুদ্ধে। দেখা যায় বা দেখতে ভালো লাগে। কুর্দিস্তান স্বাধীন হোক। যুক্তরাষ্ট্র নিজের চরকায় তেল দিতে বাধ্য হোক। জোর করে হলেও এই প্রত্যাশাটুকু বাঁচিয়ে রাখি।
৪.
ডিপ পার্পলের চাইল্ড ইন টাইম জীবনে কতবার শুনেছি বলতে পারবো না। হাজারখানেকবার হলেও অবাক হবো না। ১৯৬৯ সালের অস্থির সময়ের গান। অস্থিরতা বেড়েছে। বিভৎসতা বেড়েছে। তাই গানটা আরো শুনি। শুনতে থাকি।

No comments: