Saturday, April 18, 2015

টুকরো টুকরো লেখা ৩০

১.
বহুবছর পর পহেলা বৈশাখ ছায়ানটের বর্ষবরণ দেখলাম। পুরোটাই দেখেছি। লাইভ দেখতে না পাওয়ার দু:খ একটু একটু থাকলেও রমনার বটমূলে (আসলে নাকি অশ্বত্থ)চিরচেনা সমাবেশ দেখে নাকে রীতিমতো নববর্ষের ঘ্রাণ পাচ্ছিলাম। বেশ কিছু পরিচিত মুখ দেখলাম। অনেককে দেখলাম না। স্মৃতির মধ্যে ডুবে ছিলাম সারাদিন। রাতে শুতে যাবার আগে খবরের কাগজে শেষবার চোখ বোলাতে গিয়ে ঝাঁকি দিয়ে চটক ভাঙলো। কিছু লুম্পেন আবারও সমাবেশে ভিড়ের সুযোগে যৌন নির্যাতন চালিয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবরের মতো নিষ্ক্রিয়। এবং ঘটনার ভার্চুয়াল প্রতিক্রিয়ায় যথারীতি গরুটারই চরিত্র খারাপ প্রপঞ্চ কচলানো চলছে। পাল্টা আঘাতের কোন বিকল্প নাই এখন। মেয়েদের কাছে শুধু পেপার স্প্রে না, মার্শাল আর্ট শিক্ষা বোর্ডের পাঠক্রমভুক্ত হতে হবে। আর সব থেকে জরুরি হচ্ছে মেয়েরা আরো অনেক বেশি করে ঘরের বাইরে আসতে হবে। কী করা হারাম সেটা শিখতে হবে শফী হুজুরের বয়ানে মেয়েদের জন্য ফরজের তালিকা থেকে। শফী হুজুর যা যা করতে নিষেধ করেন আলাদাভাবে জোর দিয়ে সেগুলি করতে হবে। যৌন নির্যাতনকারীকে হাতে নাতে ধরে গণধোলাই দিতে হবে। অর্থা্ৎ যাদের চৈতন্যে সমাবেশের ভিড়ে যৌন নিপীড়নের কামনা অতি তীব্র তারা এমন কি রাজনৈতিক ক্ষমতা কাঠামোর পৃষ্ঠপোষকতা পেলেও নিছক প্রাণের ভয়ে অবদমিত হতে বাধ্য হবেন। বহু বছর তো দেখলাম। ভালো ভালো আইন আছে দেশে। প্রয়োগ নিয়ে সমস্যা। এরকম পরিস্থিতিতে গণধোলাইয়ের বিকল্প নাই।
২.
বর্ষবরণের দিনে ঐ জঘন্য ঘটনা বাদে এমনিতে কামারুর ফাঁসী, বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের জোড়া পরাজয় মিলিয়ে গত সপ্তাহখানেক মন্দ কাটে নাই। কামারুর ফাঁসীতে যতটা মজা করবো ভেবেছিলাম ততটা হলো না। এর জন্য সরকার কিছুটা দায়ী। যাই হোক হয়তো আইনের দিকটায় পরিস্কার থাকতে সরকারের কৌশল।
কাছাকাছি ধরণের একটা অনুভুতি হলো গতকাল বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের পরাজয় দেখে। ৭৯ রানে জয়কে একদিনের ক্রিকেটে বিশেষ কিছুই বলতে হবে। তারপরেও আমার আর বাংলাদেশ দলের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হলো এগুলি কিছু না। পাকিস্তানের মতো দল বাংলাদেশের কাছে হারাটাই স্বাভাবিক। ১৬ বছর পরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয় এসেছে এতে আলাদা করে আপ্লুত হবার কিছু নাই। পাকিস্তানের মতো দল বাংলাদেশের সামনে হারের উপরেই থাকবে এখন থেকে। শুধু বাংলাদেশ দলকে যেকোন মূল্যে স্পিরিটটা ধরে রাখতে হবে।
ফাঁসীর ব‌্যাপারটাও সেরকমই হতে যাচ্ছে। গণহত্যার অপরাধ আদালতে প্রমাণিত হয়েছে সময় মতো ফাঁসী কার্যকর হবার খবরে স্বস্তি আসবে। প্রতিটা ফাঁসীতে আলাদা করে উৎসবের কিছু নাই আপাতত। যেরকম ভবিষ‌্যতে অনরকম কিছুর আশঙ্কা থাকতে পারে সেই ভবিষ‌্যতকে দুরে হঠাতেই রাজাকারের ফাঁসী কার্যকরের ঘটনাকে জৈবিক স্বাভাবিকতা মানতে হবে।
৩.
অবশেষে হরতাল-অবরোধ দুইটাই উঠলো। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হচ্ছে। যেই জিতুক মনির পুড়ানো বন্ধ হবার স্বস্তিটা দীর্ঘস্থায়ী হোক।

1 comment:

Unknown said...

post ta darun hoiceMy Site