বজলুর রশীদ বজলু টেকি লোক। বয়স ২৯। টেলিকম বানিজ্যের কৃপায় অল্প বয়সেই ক্যারিয়ারে অনেক কারিশমা দেখিয়েছেন। কিন্তু দুয়েকজন অভাগার মতো তারও ক্যারিয়ারের ফেরে আর প্রেমট্রেম হয়ে ওঠেনি। বিয়ের ওয়েটিং লিস্টেও বেশ খানিকটা পিছিয়ে। তার সামনে বড় দুই ভাই মুর্তিমান খাম্বা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। জাবরকাটা স্মৃতির অনুপস্থিতিতে ইয়াহুর চ্যাটরূমগুলিই ভরসা। কিন্তু বছর দুই যাবৎ ইয়াহুতে পোষাচ্ছে না। ভর্তি সব ফেইক লোকজন। প্রমীলা নিক দেখে ক্লিক করতে না করতে হাতির শুঁড় দেখা যায়। ব্যাপারটা বেশ বিরক্তিকর। বিশেষ করে বজলুর রশীদের মতো যারা সত্যি সত্যি অন্তত অনলাইন মারফত কিছু একটা হবার প্রত্যাশা করে।
একদিন সহকর্মী বন্ধু টুনু আহমেদ তার মনিটরে ইয়াহু চ্যাটরূম দেখে খুব খ্যাপায়। বলে এখন এইসব চ্যাটফ্যাটের দিন শেষ। এখন কমিউনিটিব্লগ আর ফেইসবুকের যূগ। এইযূগে যার ফেইসবুক না থাকলে মহাপাতক হয়। আর গুম্ফবতী থাকার সম্ভাবনা নাই তা না কিন্তু ভেরি আনলাইকলি। টুনু বজলুর ছোটবেলার বন্ধু। বিচক্ষণ স্বভাব। বজলু ওর কথার খুব দাম দেয়। টুনু চলে গেলে বজলু সেইদিনই ফেইসবুকে ঢোকে। অনেক আত্মীয়স্বজন অনেক পুরনো বন্ধুবান্ধবের সাথে দেখা হয়। এমডি সপ্তাহখানেকের জন্য হংকং যাওয়ায় একটা সপ্তাহ ফেইসবুকে খুব জমিয়ে ফেলে বজলু। রাতে বাড়ি ফিরেও ল্যাপি চার্জে দিয়ে এরওর পেইজে খোঁচা দেওয়া খুঁজে খুঁজে বন্ধুদের অ্যাড করা চলতে থাকে। মাঝে মাঝে দুই একজন অচেনা মেয়েকেও অ্যাড করেছে কিন্তু এখনো কেউ অ্যাকসেপ্ট করেনি। টুনু ঠিকই বলেছিল। ফেইসবুকে সত্যিই এইসব হয় না।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টুনুর বাসায় পার্টি ছিল। ওর বাবামা বাড়ি গেছে। চাকুরিজীবি ব্যাচেলর বাসা খালি পেয়েই পার্টি ছুঁড়েছে। সেখানে ভূনাখিচুড়ি হাঁসের মাংস আর রেড লেভেল হুইস্কি মেরে টোম হয়ে বাড়ি ফিরে ল্যাপিটা অন করে বজলু। জামাখুলে ঘামটাম মুছে ফেইসবুকে ক্লিক করে দেখে জুলিয়া বশির টুসি নামে কে যেনো ইনভাইটেশান পাঠিয়েছে। অ্যাকসেপ্ট করে একটা মেসেজ দেয়, আপনাকে কি চিনি? জবাব আসে আপনি কি মাস্টারমাইন্ড ২০০২ ব্যাচ? আপনাকে কি পোলাপান বজালু বলে চ্যাতাতো? আমি মাস্টারমাইন্ড ২০০৩। বজলু বলে দু:খিত আপনি যাকে খুঁজছেন আমি সে না। আমি আপনার চেনা বজলুর থেকে প্রায় ছয় বছরের সিনিয়র। আমাকে কেউ কোনদিন বজালু বলে নাই। আপনি বললে আমি এখনই আমার ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে আপনাকে রিমুভ করছি। রিমুভ করবেন মানে? কিক আউট? কিক আউট করবেন মানে? আপনি এতো অভদ্র? আরে তা তো বলি নাই। আমি বলেছি যে আমি আপনার চেনা লোক না। আপনি তো আর আমাকে চেনেন না... না চিনলেও এখন তো চিনলেন একভাবে? কীভাবে? ভার্চুয়ালি চিনলেন! আচ্ছা চিনলাম। আপনি কী করেন জানতে পারি? সিটিএন সফটওয়্যারস্ এ আছি। কী পদে বলবো না। আচ্ছা না বললেন। আমি এনএসইউতে আছি। কোন সেমিস্টারে বলবো না। সেটা আমি অনুমান করতে পারি আপনার স্কুল ইয়ার দেখে। আপনার তো অনেক বুদ্ধি ........
এইসব নানান ধুনফুন আলাপে আলাপ তো জমে গেলো বজলুর রশীদ বজলু আর জুলিয়া বশীর টুসি'র। ব্যাপার কয়েক দিন পেরিয়ে মাস গড়ালে বজলুর বেশ খুশী খুশী লাগতে থাকে। আঠাও জোড়ালো হতে থাকে। বজলুর রশীদ এখন অফিস আওয়ারেও টুসির ফেইসবুকে সেঁটে থাকে। টুনু জানে সে ফেইসবুকে আছে। এখন আর চ্যাটফ্যাট করে না। ফেইসবুকের সুবিধা হচ্ছে কাজের তেমন ক্ষতি করছে না। অফিস আওয়ারের বেশীর ভাগটা টুসি ক্যাম্পাসে থাকে। মাঝে মাঝে মোবাইল থেকে খবর নেয়। কী করো জান? বা হোয়াটস আপ? জাতীয় প্রশ্নের মধ্যেই দিনের আলাপ সীমাবদ্ধ থাকে। প্রকৃত আলাপ শুরু হয় রাত সোয়া দশটা-সাড়ে দশটা থেকে। কত ধুনফুন কথা যে এযুগের মেয়েরা জানে! কিন্তু একটা জায়গায় এলেই টুসি থেমে যায়। সেটা শুরুতেই বলে নিয়েছিল। দেখা করার বায়না করতে পারবে না। ভার্চুয়াল সম্পর্ক ভার্চুয়ালই থাকবে। জীবনে আগে কখনো কোন মেয়ের সাথে এতো ঘনিষ্ঠ কথাবার্তা হয় নাই। বজলু এক কথায় শর্ত মেনে নেয়। টুসির সাথে এই ভার্চুয়াল আলাপের সুবাদে জীবনে প্রথমবারের মতো একটা বিশেষ ধরনের প্রশান্তি এসেছে। এই অনুভুতি বজলুর অচেনা।
স্বচ্ছ কাঁচের ওপাশ থেকে মাঝে মাঝে বন্ধুর ঘরে উঁকি দেয় টুনু আহমেদ। বন্ধু বজলু ফেইসবুকের দিকে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে। কয়েকমাসে একদম বদলে গেছে ছেলেটা। অফিসে আসতে দেরী করে না। মুখে সবসময় স্নিগ্ধ একটা হাসি। কর্মচারীদের ধমকধামক দেয় না আগের মতন। ওদিকে টুনু দিন দিন কেমন মনমরা হয়ে আসতে থাকে। বজলু কয়েকবার জিজ্ঞাসাও করেছে। টুনু কিছু বলে না। এইতো শরিরটা ভালো লাগছে না এইসব বলে কাটিয়ে দেয়। বজলু একদিন ধরে বসে তোর কী হইছে ক। কী হৈবো? কিছুই হয় নাই। কিছু না হইলে তুই সারাদিন মুখটা ঐরম ডেকচির মতন কৈরা রাখোস ক্যান? আমার মুখটাই এইরম ঠিকাছে? বালের পোলাপান চ্যাট করতে করতে মাথামুথা খাইছে....বজলুর মন খারাপ হয়ে যায়। টুনু তার কাছে কখনো কিছু লুকায় না। এখন হয়তো লুকাবার প্রয়োজন হয়েছে! বজলু যেমন টুসির সাথে আলাপের কথা টুনুকে বলেনি!
এভাবে আরো মাসখানেক যায়। এরমধ্যে অস্থির হয়ে বজলু একদিন টুসিকে বলেছে কাল সন্ধ্যায় স্যাফ্রনে এলে ক্ষতি কি তোমার? স্যাফ্রন! ভাংতি নাই। আরে তুমি যাবা আমার সাথে তুমি ভাংতির ভাবনা করো ক্যান? সরি স্যর! আমার মনে হয়না আমার এখনো আপনার সাথে খেতে যাবার সময় হয়েছে! কবে হবে? হবে! ওয়েট অ্যান্ড সি! হুহ্....
৩ জুলাই ২০০৯ লাঞ্চ আওয়ারের একটু পরে টুনু আসে বজলুর রূমে। তোর সাথে কথা আছে। বল বল...বলে মনিটর একদিকে সরিয়ে আগ্রহ দেখায় বজলু। টুনু কিছুক্ষণ টেবিলে নখ দিয়ে টুকটুক বাজিয়ে উঠে দাঁড়ায়। তারপর বজলুর চোখের দিকে তাকায়। অন্যরকম চাহনি। সোজা সামনের সোফার সামনে গিয়ে ফট করে প্যান্ট খুলে সোফার হাতলে ভর দিয়ে ঝুঁকে পড়ে।
কী হইছে? হা কইরা দেখস কী?!!!
মার !
একদিন সহকর্মী বন্ধু টুনু আহমেদ তার মনিটরে ইয়াহু চ্যাটরূম দেখে খুব খ্যাপায়। বলে এখন এইসব চ্যাটফ্যাটের দিন শেষ। এখন কমিউনিটিব্লগ আর ফেইসবুকের যূগ। এইযূগে যার ফেইসবুক না থাকলে মহাপাতক হয়। আর গুম্ফবতী থাকার সম্ভাবনা নাই তা না কিন্তু ভেরি আনলাইকলি। টুনু বজলুর ছোটবেলার বন্ধু। বিচক্ষণ স্বভাব। বজলু ওর কথার খুব দাম দেয়। টুনু চলে গেলে বজলু সেইদিনই ফেইসবুকে ঢোকে। অনেক আত্মীয়স্বজন অনেক পুরনো বন্ধুবান্ধবের সাথে দেখা হয়। এমডি সপ্তাহখানেকের জন্য হংকং যাওয়ায় একটা সপ্তাহ ফেইসবুকে খুব জমিয়ে ফেলে বজলু। রাতে বাড়ি ফিরেও ল্যাপি চার্জে দিয়ে এরওর পেইজে খোঁচা দেওয়া খুঁজে খুঁজে বন্ধুদের অ্যাড করা চলতে থাকে। মাঝে মাঝে দুই একজন অচেনা মেয়েকেও অ্যাড করেছে কিন্তু এখনো কেউ অ্যাকসেপ্ট করেনি। টুনু ঠিকই বলেছিল। ফেইসবুকে সত্যিই এইসব হয় না।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টুনুর বাসায় পার্টি ছিল। ওর বাবামা বাড়ি গেছে। চাকুরিজীবি ব্যাচেলর বাসা খালি পেয়েই পার্টি ছুঁড়েছে। সেখানে ভূনাখিচুড়ি হাঁসের মাংস আর রেড লেভেল হুইস্কি মেরে টোম হয়ে বাড়ি ফিরে ল্যাপিটা অন করে বজলু। জামাখুলে ঘামটাম মুছে ফেইসবুকে ক্লিক করে দেখে জুলিয়া বশির টুসি নামে কে যেনো ইনভাইটেশান পাঠিয়েছে। অ্যাকসেপ্ট করে একটা মেসেজ দেয়, আপনাকে কি চিনি? জবাব আসে আপনি কি মাস্টারমাইন্ড ২০০২ ব্যাচ? আপনাকে কি পোলাপান বজালু বলে চ্যাতাতো? আমি মাস্টারমাইন্ড ২০০৩। বজলু বলে দু:খিত আপনি যাকে খুঁজছেন আমি সে না। আমি আপনার চেনা বজলুর থেকে প্রায় ছয় বছরের সিনিয়র। আমাকে কেউ কোনদিন বজালু বলে নাই। আপনি বললে আমি এখনই আমার ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে আপনাকে রিমুভ করছি। রিমুভ করবেন মানে? কিক আউট? কিক আউট করবেন মানে? আপনি এতো অভদ্র? আরে তা তো বলি নাই। আমি বলেছি যে আমি আপনার চেনা লোক না। আপনি তো আর আমাকে চেনেন না... না চিনলেও এখন তো চিনলেন একভাবে? কীভাবে? ভার্চুয়ালি চিনলেন! আচ্ছা চিনলাম। আপনি কী করেন জানতে পারি? সিটিএন সফটওয়্যারস্ এ আছি। কী পদে বলবো না। আচ্ছা না বললেন। আমি এনএসইউতে আছি। কোন সেমিস্টারে বলবো না। সেটা আমি অনুমান করতে পারি আপনার স্কুল ইয়ার দেখে। আপনার তো অনেক বুদ্ধি ........
এইসব নানান ধুনফুন আলাপে আলাপ তো জমে গেলো বজলুর রশীদ বজলু আর জুলিয়া বশীর টুসি'র। ব্যাপার কয়েক দিন পেরিয়ে মাস গড়ালে বজলুর বেশ খুশী খুশী লাগতে থাকে। আঠাও জোড়ালো হতে থাকে। বজলুর রশীদ এখন অফিস আওয়ারেও টুসির ফেইসবুকে সেঁটে থাকে। টুনু জানে সে ফেইসবুকে আছে। এখন আর চ্যাটফ্যাট করে না। ফেইসবুকের সুবিধা হচ্ছে কাজের তেমন ক্ষতি করছে না। অফিস আওয়ারের বেশীর ভাগটা টুসি ক্যাম্পাসে থাকে। মাঝে মাঝে মোবাইল থেকে খবর নেয়। কী করো জান? বা হোয়াটস আপ? জাতীয় প্রশ্নের মধ্যেই দিনের আলাপ সীমাবদ্ধ থাকে। প্রকৃত আলাপ শুরু হয় রাত সোয়া দশটা-সাড়ে দশটা থেকে। কত ধুনফুন কথা যে এযুগের মেয়েরা জানে! কিন্তু একটা জায়গায় এলেই টুসি থেমে যায়। সেটা শুরুতেই বলে নিয়েছিল। দেখা করার বায়না করতে পারবে না। ভার্চুয়াল সম্পর্ক ভার্চুয়ালই থাকবে। জীবনে আগে কখনো কোন মেয়ের সাথে এতো ঘনিষ্ঠ কথাবার্তা হয় নাই। বজলু এক কথায় শর্ত মেনে নেয়। টুসির সাথে এই ভার্চুয়াল আলাপের সুবাদে জীবনে প্রথমবারের মতো একটা বিশেষ ধরনের প্রশান্তি এসেছে। এই অনুভুতি বজলুর অচেনা।
স্বচ্ছ কাঁচের ওপাশ থেকে মাঝে মাঝে বন্ধুর ঘরে উঁকি দেয় টুনু আহমেদ। বন্ধু বজলু ফেইসবুকের দিকে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে। কয়েকমাসে একদম বদলে গেছে ছেলেটা। অফিসে আসতে দেরী করে না। মুখে সবসময় স্নিগ্ধ একটা হাসি। কর্মচারীদের ধমকধামক দেয় না আগের মতন। ওদিকে টুনু দিন দিন কেমন মনমরা হয়ে আসতে থাকে। বজলু কয়েকবার জিজ্ঞাসাও করেছে। টুনু কিছু বলে না। এইতো শরিরটা ভালো লাগছে না এইসব বলে কাটিয়ে দেয়। বজলু একদিন ধরে বসে তোর কী হইছে ক। কী হৈবো? কিছুই হয় নাই। কিছু না হইলে তুই সারাদিন মুখটা ঐরম ডেকচির মতন কৈরা রাখোস ক্যান? আমার মুখটাই এইরম ঠিকাছে? বালের পোলাপান চ্যাট করতে করতে মাথামুথা খাইছে....বজলুর মন খারাপ হয়ে যায়। টুনু তার কাছে কখনো কিছু লুকায় না। এখন হয়তো লুকাবার প্রয়োজন হয়েছে! বজলু যেমন টুসির সাথে আলাপের কথা টুনুকে বলেনি!
এভাবে আরো মাসখানেক যায়। এরমধ্যে অস্থির হয়ে বজলু একদিন টুসিকে বলেছে কাল সন্ধ্যায় স্যাফ্রনে এলে ক্ষতি কি তোমার? স্যাফ্রন! ভাংতি নাই। আরে তুমি যাবা আমার সাথে তুমি ভাংতির ভাবনা করো ক্যান? সরি স্যর! আমার মনে হয়না আমার এখনো আপনার সাথে খেতে যাবার সময় হয়েছে! কবে হবে? হবে! ওয়েট অ্যান্ড সি! হুহ্....
৩ জুলাই ২০০৯ লাঞ্চ আওয়ারের একটু পরে টুনু আসে বজলুর রূমে। তোর সাথে কথা আছে। বল বল...বলে মনিটর একদিকে সরিয়ে আগ্রহ দেখায় বজলু। টুনু কিছুক্ষণ টেবিলে নখ দিয়ে টুকটুক বাজিয়ে উঠে দাঁড়ায়। তারপর বজলুর চোখের দিকে তাকায়। অন্যরকম চাহনি। সোজা সামনের সোফার সামনে গিয়ে ফট করে প্যান্ট খুলে সোফার হাতলে ভর দিয়ে ঝুঁকে পড়ে।
কী হইছে? হা কইরা দেখস কী?!!!
মার !
1 comment:
আচ্ছা, আচ্ছা, তাহলে এই ব্যাপার????
aR
http://banglahacks.blogspot.com
Post a Comment