Sunday, June 10, 2007

ডি এক্ ক্নাইপে ১

কাসেল শহরটা উপর থেকে একটা সানকির মতো দেখতে। চারদিকে পাহাড়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে জার্মানীর ষষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল।শহরের যে অঞ্চলে বর্তমান কাসেল বিশ্ববিদ্যালয় সেখানে নাৎসীদের অস্ত্র কারখানা ছিল।১৯৪৩ আর ১৯৪৪ এ দুই দফা ধুন্ধুমার বোমাবর্ষণে গুটি কয় দালানমাত্র অবশিষ্ট ছিল। তার মধ্যে আছে সেই অস্ত্রকারখানার বিশাল একটা চিমনি।আর শহরের উপকণ্ঠে ষোড়শ শতকের বিশাল দূর্গ হারকিউলিস।
অস্ত্র কারখানার চিমনি থেকে কয়েক কদম দূরেই আমার বাস। সেখান থেকে চিমনি পেরিয়ে মিনিট দশেক উত্তরে গেলেই শহর শেষ।তারপর পাহাড়ের কোল ঘেষে ফুলদা নদী চলে গেছে লোয়ার স্যাক্সনীর দিকে। ফাঁকে ফাঁকে গ্রাম।
ইংরেজীতে যাকে পাবলিক বার বা পাব বলে, জার্মান ভাষায় সেটা ক্নাইপে(Kneipe)। সন্ধ্যায় কর্মক্লান্ত মানুষ আর দিনের বেলা অবসরে যাওয়া বুড়োদের কিঞ্চিৎ মদ্যপান আর বকবক করার জায়গা। মূল শহরে ক্নাইপে বলে যেটা দেখা যায় তাতে নাগরিক ম্যানিপুলেশন অনেক বেশী। কাসেল শহরের ক্নাইপেগুলো ঘুরে দেখেছি সবই আদতে রেস্টুরেন্ট কাম বার।সত্যিকার ক্নাইপের দেখা পেতে যেতে হবে শহরের বাইরে।
শহরের সীমান্তের শেষ বাড়িটার পরে একটা পেট্রোল পাম্প। তার উল্টোদিকে বোমা হামলা থেকে বেঁচা যাওয়া উনবিংশ শতাব্দীর স্মৃতি নিয়ে দাড়িয়ে থাকা একটি দালান। তার নীচতলার কোনায় ছোট্ট একটা ক্নাইপে। নাম ক্নাইপে ইন ডি একে। মানে কোনার শুড়িখানা।
মাঝেমধ্যে যাই সেখানে। বুড়োদের প্রাধান্য। বাজনা বলতে জার্মান লোকসঙ্গীত বেজে চলছে সারাক্ষণ আর বকবকানি। বিচিত্রসব বিষয়বস্তু।বহুদিন থেকেই ভাবছিলাম এই বকবকানি গুলোর টুকে রাখবো কোন পোস্টে। অনেকদিনের অনেক গল্প। এক এক করে দেবো এক একটা পোস্টে। আজকের মতো ভুমিকাতেই ইতি।

No comments: