পাকিস্তানের ঘটনাবলী নিয়ে আমি সাধারাণত চুপ থাকি বা আগ্রহ দেখাইনা। এর পিছনে হয়তো জাতীয়তাবাদী সঙ্কীর্ণতা আছে এবং ঐতিহাসিক কারণে আমি তাতে একটুও অনুতপ্ত না। পাকিস্তানের কোথাও কোন ক্ষতি হলে ভালোই লাগে। মনে আছে ১৯৯৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ৪২ রানে অল আউট হবার পরে আমাদের বাসায় মোরগ পোলাও রান্না হয়েছিল। এখনো পাকিস্তানের কোন ক্ষতি হলে মনমেজাজ ভালো হয়ে যায়। রুজি রোজগার বাড়লে হয়তো দানখয়রাতও করবো। এসবের জন্য ১৯৭১ যতটা না দায়ী তার থেকে অনেক বেশী দায় আশির দশকে মানসিক বৃদ্ধির বয়সে পারিপার্শ্বে রাষ্ট্রীয় এবং আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে বেড়ে ওঠা পাকিস্তানপন্থীদের উল্লাস। আশির দশকের শেষে পূর্ব ইউরোপে সমাজতান্ত্রিক শিবিরে ধ্বস নামার উল্লাসে কিছু লোকের জিভ নাভি পর্যন্ত লম্বা হয়ে বের হতে শুরু করে পাকিস্তান প্রেমে, যদিও পকেটের ফের তাঁদের সকলকেই বাধ্যতামূলকভাবে ভারতীয় পুঁজির দাসত্ব করিয়েছে। আমার শৈশবের কৈশরের তিক্ততম স্মৃতিগুলি এই অসুন্দর মনের পাকিস্তান প্রেমিকদের ঘিরে। তারপর বয়স আরো বাড়ার মুখে পাকিস্তানের বিপরীতে ভারত সমর্থক হবার সরল হিসেবও পাল্টে যায়। রাজনৈতিক ইতিহাসকে গ্যাস বেলুন সংস্কৃতির নাকি কান্নার ঊর্ধ্বে স্থান দিয়ে ভারত রাষ্ট্রকে সাম্রাজ্যবাদী বলেই জানতে বুঝতে শিখেছি।
সাম্রাজ্যবাদের নিয়মিত ঘুঁটি হিসেবে ঘৃণা করতে শিখেছি ধর্মীয় মৌলবাদকে। রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্রকে রাজনীতি বিচারের একমাত্র না হলেও প্রধান মানদন্ড হিসেবে ধরে নিয়ে বুশ আর লাদেনের মাঝে ধূসর এলাকা খুঁজতে আতশ কাঁচ নিয়ে বসে না গিয়ে বুশ-লাদেনকে এক পক্ষ বলেই জেনেছি। তাই সাম্প্রদায়িক ভারত আমাকে কখনোই পাকিস্তান প্রেমিক করেনি। উল্টে সাম্প্রদায়িক ভারতে বুঝতে গিয়ে জেনেছি ইসলামী মৌলবাদীদের স্পন্সরদের তালিকায় হিন্দু মৌলবাদের স্পন্সরাও রয়েছেন। ভারতে অঞ্চলভেদে পুঁজিবাদী অবকাঠামোর কিছুটা বিকাশ ঘটায় হিন্দু মৌলবাদীরা রাজনৈতিকভাবে ইসলামী মৌলবাদীদের তুলনায় সংগঠিত এবং অবশ্যই বিপজ্জনক ফ্যাসীবাদী শক্তি। ইসলামী মৌলবাদীদের সেদিক থেকে দেখতে গেলে না গাঁটের পয়সায় না নিজের বুদ্ধিতে কোনদিকেই নিজের মতো করে কিছু বলার বা করার নেই। বহুদিন আগে পৃথিবীতে কমিউনিস্ট বলে এক ধরণের জুজুর বাস ছিল। তাঁরা আঙ্কল স্যামকে অনেক ব্যাথা দিয়েছেন। সেই হোগার ব্যাথায় কাতর রুজভেল্ট, ট্রুম্যান, আইসেনহাওয়ার, কেনেডি, জনসন, নিক্সন, তাঁদের ভাড়া করা থিঙ্কট্যাঙ্ক কিসিঞ্জার, ম্যাকনামারা সবাই মিলে জুজুর বিরুদ্ধে ধর্মীয় ফ্যাসীবাদকেই মোক্ষমতম অস্ত্র হিসাবে বেছে নিলেন। নাৎসীদের মতো করে কমিউনিস্ট পার্টির কাঠামোর সাথে মিলিয়ে তৈরী হয়েছে একটার পর একটা জেহাদী সংগঠন। পুঁজি ধর্মান্ধতা, নিয়ন্ত্রণে ধর্মব্যবসায়ীরা। পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত ধর্মীয় মৌলবাদ বলতে এর বাইরে আমরা আর কাউকে জানি না বুঝি না। ভাড়াটে গুন্ডা কখনো বখরার ভেজালে মহাজনের কল্লা নিতে চায় অথবা "পাপ" ঝেড়ে ফেলতে কিংবা মহাজন ১.২ বা মহাজন ১.৩কে ঘিরিঙ্গীতে ফেলতে পুরনো গুন্ডাদের নানান ওছিলায় খতম করেন বা করতে চান। এর কোনটাতেই "ভাড়াটে গুন্ডা" স্ট্যাটাস চ্যুত হন না। মহাজনের প্রতি গুন্ডা তাঁর ক্ষোভকে সত্যিকারের পরিবর্তনের দিকে নিতে পারেন শুধুমাত্র মহাজনের আওতা বহির্ভুত নেটওয়ার্কে সংগঠিত হয়ে এমন কিছু করার মাধ্যমে যাতে মহাজনের বাস্তব ক্ষতি হয়। তাতে প্রয়োজন জনসম্পৃক্তি, সব চাইতে বড় কথা শ্রেণী সংগ্রামের বাস্তব ইস্যুগুলিতে প্রত্যক্ষ সক্রিয় অবস্থান। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। অন্তত আমার উল্লেখিত এলাকায় হচ্ছে না। একটা শ্রমিক আন্দোলনের কথাও মনে পড়ছে না যেটা ধর্মীয় মৌলবাদীদের নেতৃত্বে ঘটেছে। কৃষক আন্দোলনে ধর্মীয় প্রভাবের ইতিহাসও রুশ বিপ্লবের আগের, মোটামুটি শদেড়েক বছরের পুরনো। সুতরাং শোষিত মানুষের বস্তুগত স্বার্থের পক্ষে জানা ইতিহাসে আমার উল্লেখিত ভূগোলে বিগত আশি-নব্বুই বছর ধরে সক্রিয় ধর্মীয় মৌলবাদের কোন রকমের কোন বাস্তব কার্যক্রমের ইতিহাস নেই। থাকলে ধর্মীয় মৌলবাদকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে দেখা যেতো। খ্রীষ্টান মহাজনের টাকায় আর আঞ্চলিক শাসক শ্রেণীর তত্ত্বাবধানে খেতে পড়তে হুকুম তামিল করতে দেখা যেতো না।
এই সব কথা সকলেই জানেন। যারা এই মুহুর্তে পাকিস্তানের ঘটনাবলী নিয়ে নানাভাবে উদ্বিগ্ন তাঁদের সকলেই আমার থেকে এই বিষয়গুলি জানেন বোঝেন। তাঁরা অবশ্যই এও জানেন যে তালিবান খতমে পাকিস্থানী সেনাবাহিনির ব্যবহার আসলে ক-গ্রুপের গুন্ডা দিয়ে খ-গ্রুপের গুন্ডা খতম। পাকিস্থানের জমিটা সাহেবদের জন্য হাতে রাখা জরুরি। যুদ্ধ পরিস্থিতি সেই কাজে সর্বোত্তম সহায়ক। আবার ওদিকে রিসেশন ঠেকাতে একটা কোথাও ঢুঁশঢাশ লাগানো ফরজ। পাকিস্তানে আক্রমন করার খায়েশ ওবামা নির্বাচনের আগেই ব্যক্ত করেছিলেন। ইরানে আক্রমন করা বিষয়ে নানান কথা বললেও এই মুহুর্তে ইরান আক্রমণের তেল সফেদ মহাজনের নাই। পুরা আরব বিশ্বেই এই মুহুর্তে আক্রমণ করা বা কোন রকম ঢুঁশঢাশ করতে বর্তমান সাদাবাড়ি প্রশাসনের টেকনিক্যাল অসুবিধা আছে কারণ ভোটের সময় ঐ বিষয়ে জনগণকে নানা রকম ভুজুংভাজুং দেওয়া হয়েছে। সুতরাং হাতের কাছে মোয়ার মতো আছে পাকিস্থান। সেখানে সিন্ধু বা বেলুচিস্তানের স্বাধীনতাকামীদের বাইরে যতরকম ক্যাচাল আছে তার পক্ষবিপক্ষের সবাই নিজেদের লোক। সুতরাং সামরিক নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতে এবং পেন্টাগণের এম্বেড করা তথাকথিত [b]সভ্যতা সমূহের দ্বন্দ্ব[/b] নামক [b]ডিসকোর্স[/b] নতুন করে উস্কে তুলে ইউরোপকে রাজনৈতিকভাবে হাতে রাখা যাতে খোলাখুলি ইউরোপ আর উত্তর আমেরিকার বানিজ্য যুদ্ধ লোকে সাদা চোখে না দেখে, তার প্রক্রিয়ায় খুবই কার্যকর এবং জরুরি পদক্ষেপ হচ্ছে পাকিস্তানে তালেবান ইস্যুতে সামরিক অভিযান। কথাটা একভাবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও সত্য। কিন্তু এলাকা বিশেষে স্বতন্ত্র রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে। কারণ বাংলাদেশে তালেবানরা সংখ্যায় পাকিস্তানের তুলনায় নগন্য। আরো নগন্য তাঁদের প্রতি শ্রমজীবি মানুষের সমর্থন বা সহানুভূতি। তারপরেও সামরিক লীগেসীর কৃপায় কিছুটা হোমোজিনিয়াস রাজনৈতিক বাস্তবতা এখানে সফেদ মহাজন সৃষ্টি করে রেখেছেন, যা থেকে প্রয়োজন হবা মাত্র তিনি পকেট থেকে এক খাবলা বাংলা ভাই বা শায়খ রহমান বা আরো যেসব অ্যাসহোলরা আছে তাঁদের বের করতে পারেন। তারপর এদিক ওদিক কিছু বোমা ফাটিয়ে সুবিধা মতো তাকিয়া পেতে বসতে পারেন।
এখন সাম্প্রতিককালে বাংলাব্লগাবর্তের উত্তরাধুনিক চাপাবাজ এবং প্রাক্তন হতাশ বামপন্থীদের কাছে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ১৯৭১ সালে গণহত্যায় সক্রিয় সমর্থন এবং অংশগ্রহনকারীদের বিচার ও শাস্তির দাবীর মতো দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের পলিটিতে সক্রিয় একটি বিষয়, যার প্রকৃত কার্যকারীতা সম্ভব শুধুমাত্র ধর্মীয় মৌলবাদী রাজনীতি, যা ১৯৭৫ সালের সামরিক অভ্যুত্থানকারীদের এবং পরবর্তী সামরিক শাসকদের বন্দুকের জোরে আইনসিদ্ধ হয়েছিল তার আইনি অবলুপ্তি, সেই প্রসঙ্গটির উল্লেখ এবং বিচার অনুষ্ঠানের বাস্তব উদ্যোগে যেহেতু ক্ষমতাসীন সরকারের এবং হয়তো আঙ্কেল স্যামেরও খানিকটা রাজনৈতিক উপকার হয় সেই যুক্তিতে মৌলবাদের প্রতি সহানুভুতিশীল হবার কোন জায়গা তৈরী হয় কি? উত্তরাধুনিকদের কিছু বলার নেই কারণ তাঁরা সিদ্ধান্ত বা প্রয়োগের মতো দুরূহ কাজের মধ্যে নাই। তাঁরা তাঁদের কল্পনার প্রপঞ্চগুচ্ছের বালবাগিচায় ধুসর আইল ধরে ডুব সাঁতার কাটেন। এই বিদ্যা আমার আওতা বর্হিভুত সুতরাং তাঁদেরকে বীর্য্যমাখা মুড়ি খেতে বলা ছাড়া আমার আর কিছু বলার নেই।
কিন্তু হতাশ বামপন্থীদের অনেকেই যাদের সকলেই ঠিক পয়সা খেয়ে নয় নিজেদের বা পূর্ববর্তী প্রজন্মের সাংগঠনিক ব্যর্থতা থেকে বাস্তবিক হতাশ হয়েছেন, ধর্মীয় মৌলবাদের প্রতি তাঁদের কারো কারো (সকলের না। এখনো ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে যে কয়জন মানুষ স্পষ্ট করে কথা বলেন তাঁরা সকলেই কোন না কোন ভাবে মার্কসীয় বুদ্ধিবৃত্তিক অনুশীলনের সঙ্গে জড়িত) সহানুভুতি দেখে আমার ব্রহ্মতালু জ্বলে যাচ্ছে কিছুদিন যাবৎ। পুরনো সংগঠন হাতছাড়া হয়েছে নিজেদের দোষে। সেই সুযোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এই জন্য আওয়ামী লীগের উপর গাল ফুলিয়ে বসে থাকার তো আর কোন মানে নেই। আওয়ামী লীগ যেমন পরিস্থিতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে কার্যকর হোমওয়ার্ক করে উঠে এসেছিল ষাটের দশকে, সেই রকম সুযোগ নেবার মতো অনেকগুলি পরিস্থিতি কিন্তু গত ৩৮ বছরে আপনাদের চোখের সামনে দিয়ে সুড়ুৎ করে বেরিয়ে গিয়েছে। সেগুলি ধরতে না পারার দায়ও কিন্তু এককভাবেই আপনাদের। এখন কথা হচ্ছে লেনিনবাদী রাজনীতিতে অর্থাৎ মার্কসবাদের মেঠো প্রয়োগে "কী করিতে হইবে?" প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। সুতরাং প্রতিটা মুহুর্তেরই নিজস্ব কর্তব্য স্থির করে নেওয়া এবং সতর্ক বস্তুবাদী ডায়নামিজম সক্রিয় রাখা যে লোক নিজেকে পার্টিজান বামপন্থী বলে দাবী করেন তাঁর জন্য ফরজ। খবরের কাগজে, ফেইসবুকে, ইয়াহুগ্রুপে, গুগলগ্রুপে নিজেদের অতীত নিয়ে হতাশ হয়ে মৌলবাদীদের প্রতি প্যাসিভ সহানুভুতি দেখিয়ে পরবর্তী প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার অর্থই কিন্তু সাম্রাজ্যবাদের বাস্তব দালালী।
সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামুন। যেমন নেমেছিলেন ফুলবাড়িতে। আমি বর্তমানে মাঠে নেই। কিন্তু মাঠে কারা থাকে কীভাবে থাকে জানি। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে অনেক বড় প্রতিরোধ হয়েছে ফুলবাড়িতে। সেই এশিয়া এনার্জি আবারো নানান ফিকিরে ফিরে আসতে চাইছে। এই বিষয়গুলি নিয়ে সামনে আসুন। শ্রমিক আন্দোলনগুলিকে লুম্পেনাইজেশান থেকে রক্ষা করে সাংগঠনিক রাজনীতির জায়গায় আনবার পুরনো প্রচেষ্টা নতুন উদ্যমে চালিয়ে যান। কোন সমস্যা নাই। কারণ বিষয়গুলি বাস্তব। এবং শুধুমাত্র এই বিষয়গুলিই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বাস্তব ক্ষতি করতে পারে। শ্রমিক শ্রেণী আছে এবং তারা ক্রমবর্ধমান। কিছুদিন পর পর তাঁদেরকে জেগে উঠতেও দেখা যায়। আর সেখানে হয় কোন রাজনৈতিক ট্যাগিং থাকেনা বা থাকলে শুধুমাত্র বামপন্থীরা থাকেন। লড়তে চাইলে লড়বার সত্যিকার ইচ্ছা থাকলে দেখবেন মাঠ প্রস্তুতই আছে। পশ্চিমের বিকিনি পড়া নারী কর্পোরেট পণ্য সুতরাং গলা পর্যন্ত পুঁতে পাথর ছুঁড়ে মারা তার থেকে কতটা খারাপ এইসব ধূসর গুমুত যত ছড়াবেন ততই এগুলি আরো বেশী করে আপনার প্লেটেডেগচীতে মাখামাখি হবে।
একসাথে অনেক কথা বলতে গিয়ে সব আবোলতাবোল হয়ে গেলো। কথা শুরু করেছিলাম পাকিস্তান নিয়ে। পাকিস্তান ১৯৪৭ সাল থেকেই কমিউনিস্ট খতমের পুণ্যকাজে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করতে নিজেদের শরিরে ধর্মীয় মৌলবাদের মতো ক্যান্সার সেল তৈরী করেছে বাড়তে দিয়েছে। এখন রোগযন্ত্রণা ভোগ করাই তাঁদের কপাল। অন্যকোন দেশ হলে হয়তো খানিক সহানুভুতি জানাতাম, কিন্তু পাকিস্তান বলে সেরকম কোন কিছু মনে আসছে না। পাকিস্তানে আজকে যা হচ্ছে সেটা ওদেরই কর্মফল এবং খেলা সবে শুরু।
উত্তরাধুনিক ধর্মাচরনের ঠ্যালা বুঝেন এইবার। মিস পাকিস্তানরেও নিনজা বানাইয়া ছাড়বো।
ছবি : গুগল সার্চ থিকা
No comments:
Post a Comment