দ্্বিজাতিত্বত্ত্বের সত্যমিথ্যা এবং বিভাগপূর্ব ব্রিটিশ ভারতের রাজনীতি আমার অলোচ্য বিষয় নয়; এই বিষয়ে আলোচনা করতে গেলে আস্ত একখানা বই লিখতে হবে। কেউ চাইলে মোটামুটি একটা বিবলিওগ্রাফী দিতে পারি । তবে আমার ধারনা সেক্ষেত্রে পুস্তকের বপু সাধারণ আলোচনার উৎসাহে ভাটা ফেলতে পারে । আলোচ্য বিষয় হচ্ছে দ্্বিজাতিত্বত্ত্ব এবং মুক্তিযুদ্ধের সম্পর্ক।
দ্্বিজাতি ত্বত্ত্বের মূল কথা ছিল, হিন্দু আর মুসলমানদের সাংস্কৃতিক জীবন সম্পূর্ণ আলাদা এবং অর্থনৈতিকভাবে হিন্দুদের কারণে মুসলমানরা পিছিয়ে । এই বিভেদ এতটাই প্রকট যে এই দুই ধর্মের অনুসারিরা কোন অবস্থাতেই একত্রে একটি শাসন ব্যাবস্থার অধীনে বসবাস করতে পারবে না । সুতরাং বৃটিশ ভারতের অধিবাসী তাবৎ মুসলমানের জন্য একটি প্রথক রাষ্ট্রআবশ্যক। কংগ্রেস ত্যাগের পরে জিন্নাহ এই ''ত্বত্ত্ব'' প্রসব করেন । যার ''বাস্তবতা'' জনগণকে উপলব্ধি করানোর জন্যে 1946 সালের বর্বরতার প্রয়োজন হয়েছিল ।
পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের অবব্যহিত পরে জিন্নাহ বললেন, '' হিন্দুরা আর হিন্দু থাকবে না, মুসলমানেরা আর মুসলমান থাকবে না তারা সকলেই পাকিস্তানী।'' এই বাক্যটি দ্্বিজাতিত্বত্ত্বের মূলনীতিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয় । ভারতে বসবাসকারি মুসলমান এবং পাকিস্তানে বসবাসকারি হিন্দুদের ভবিষ্যৎ কি হবে? দ্্বিজাতিত্বত্ত্ব যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে সবার আগে যেসব অঞ্চলে যারা সংখ্যালঘু তারা সংখ্যাগরিষ্ট এলাকায় গমন করবেন । অথর্াৎ পপুলেশন ট্রানসফার । প্রায় 50 হাজার মানুষ নিহত হয় সেই দাঙ্গায় ।সংখ্যালঘুদের ফেলে পালানো এই সম্পত্তির দখলদারিত্ব গ্রহণ করে, 1946-48 এর দাঙ্গায় অংশ নেওয়া সেই লুম্পেন শ্রেণীটি । এই শ্রেণীর পরবতর্ী বিকাশ নিয়ে আলাদা পোস্টে আলোচনা করতে হবে কারণ এরাই পূর্ব বাংলা এবং বর্তমান বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পরবতর্ীরাজনৈতিক খুঁটি এবং সে কারণেই এই বিষয়টি ব্যাপক ।
পপুলেশন ট্রানসফার শেষ পর্যন্ত ব্যার্থ হয় দাঙ্গার নিষ্ঠুরতায় । দাঙ্গার ভয়াবহতা, নব্য রাজনৈতিক কতৃত্বের নিপীড়নমূলক নীতি মুসলীম লীগ সরকারের জনসমর্থন শুণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনে । পাকিস্থান রাষ্ট্রের উপর ঐ সময়ে সৃষ্ট নেতিই আমার ব্যক্তিগত মতে মুক্তিসংগ্রাম পর্যন্ত পলিটিক্যাল স্পিরিট হিসেবে কাজ করেছে । এই স্পিরিট তাই মূলগত ভাবেই দ্্বিজাতিত্বত্ত্ব- বিরোধি ।
কি প্রমাণিত হয় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের মাধ্যমে? পাকিস্থান রাষ্ট্রের ভিত্তি করুণভাবে ব্যার্থ প্রমাণিত হয় । সমগ্র মুসলিম জাহান একটি জাতি,তার একপ্রান্তে কুটুস কইরা কামুড় দিলে অন্য প্রান্তে উ: কইরা ওঠে, প্রমাণিত হয় কথাটা সর্বৈব মিথ্যা । পাকিস্থান রাষ্ট্রের পতন সরাসরি ভাবেই দ্্বিজাতিত্বত্ত্বের প্রত্যাখ্যান । পুরো 23টি বছরে একমুহুর্তের জন্যেও পাকিস্থানের দুই অংশে ন্যাশনাল ইন্টিগ্রেশানের নু্যনতম সম্ভাবনা দেখা যায়নি । কারণ ধমর্ীয় পরিচয়, কখনওই জিন্নাহ সাহেবের দাবী অনুসারে ''এথনিসিটি''তে পরিণত হতে পারেনি ।
অনেক গুলো বাক্য অতিকথনদুষ্ট হয়ে গেল । মুক্তিযুদ্ধ এবং দ্্বিজাতিত্বত্ত্বের পারস্পরিক সম্পর্ক নিরুপণ করতেই এই লেখা শুরু করেছিলাম । আমরা 23 বছরের ইতিহাস থেকে যে কিউ.ই.ডিতে পৌঁছতে পারি , তা হলো আদর্শিকভাবে 1947 এর প্রথম লগ্ন থেকে 1971 পর্যন্ত যত আন্দোলন সংগ্রাম সংঘটিত হয়েছে তার প্রত্যেকটিই দ্্বিজাতিত্বত্ত্বের ভিত্তিমূলকে চ্যালেঞ্জ করে । ধর্মনিরপেক্ষতা তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নিউক্লিয়াস । এই ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তি পশ্চিম ইউরোপের প্রটেস্ট্যান্ট এথিকস নয় , বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ হতদরিদ্রমানুষের র্যাডিক্যাল অসাম্প্রদায়িক স্ম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনা । নুরুল দ্্বীন, বিরসা মুন্ডারা যেই চেতনা ধারণ করতেন ।
দ্্বিজাতি ত্বত্ত্বের মূল কথা ছিল, হিন্দু আর মুসলমানদের সাংস্কৃতিক জীবন সম্পূর্ণ আলাদা এবং অর্থনৈতিকভাবে হিন্দুদের কারণে মুসলমানরা পিছিয়ে । এই বিভেদ এতটাই প্রকট যে এই দুই ধর্মের অনুসারিরা কোন অবস্থাতেই একত্রে একটি শাসন ব্যাবস্থার অধীনে বসবাস করতে পারবে না । সুতরাং বৃটিশ ভারতের অধিবাসী তাবৎ মুসলমানের জন্য একটি প্রথক রাষ্ট্রআবশ্যক। কংগ্রেস ত্যাগের পরে জিন্নাহ এই ''ত্বত্ত্ব'' প্রসব করেন । যার ''বাস্তবতা'' জনগণকে উপলব্ধি করানোর জন্যে 1946 সালের বর্বরতার প্রয়োজন হয়েছিল ।
পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের অবব্যহিত পরে জিন্নাহ বললেন, '' হিন্দুরা আর হিন্দু থাকবে না, মুসলমানেরা আর মুসলমান থাকবে না তারা সকলেই পাকিস্তানী।'' এই বাক্যটি দ্্বিজাতিত্বত্ত্বের মূলনীতিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয় । ভারতে বসবাসকারি মুসলমান এবং পাকিস্তানে বসবাসকারি হিন্দুদের ভবিষ্যৎ কি হবে? দ্্বিজাতিত্বত্ত্ব যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে সবার আগে যেসব অঞ্চলে যারা সংখ্যালঘু তারা সংখ্যাগরিষ্ট এলাকায় গমন করবেন । অথর্াৎ পপুলেশন ট্রানসফার । প্রায় 50 হাজার মানুষ নিহত হয় সেই দাঙ্গায় ।সংখ্যালঘুদের ফেলে পালানো এই সম্পত্তির দখলদারিত্ব গ্রহণ করে, 1946-48 এর দাঙ্গায় অংশ নেওয়া সেই লুম্পেন শ্রেণীটি । এই শ্রেণীর পরবতর্ী বিকাশ নিয়ে আলাদা পোস্টে আলোচনা করতে হবে কারণ এরাই পূর্ব বাংলা এবং বর্তমান বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পরবতর্ীরাজনৈতিক খুঁটি এবং সে কারণেই এই বিষয়টি ব্যাপক ।
পপুলেশন ট্রানসফার শেষ পর্যন্ত ব্যার্থ হয় দাঙ্গার নিষ্ঠুরতায় । দাঙ্গার ভয়াবহতা, নব্য রাজনৈতিক কতৃত্বের নিপীড়নমূলক নীতি মুসলীম লীগ সরকারের জনসমর্থন শুণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনে । পাকিস্থান রাষ্ট্রের উপর ঐ সময়ে সৃষ্ট নেতিই আমার ব্যক্তিগত মতে মুক্তিসংগ্রাম পর্যন্ত পলিটিক্যাল স্পিরিট হিসেবে কাজ করেছে । এই স্পিরিট তাই মূলগত ভাবেই দ্্বিজাতিত্বত্ত্ব- বিরোধি ।
কি প্রমাণিত হয় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের মাধ্যমে? পাকিস্থান রাষ্ট্রের ভিত্তি করুণভাবে ব্যার্থ প্রমাণিত হয় । সমগ্র মুসলিম জাহান একটি জাতি,তার একপ্রান্তে কুটুস কইরা কামুড় দিলে অন্য প্রান্তে উ: কইরা ওঠে, প্রমাণিত হয় কথাটা সর্বৈব মিথ্যা । পাকিস্থান রাষ্ট্রের পতন সরাসরি ভাবেই দ্্বিজাতিত্বত্ত্বের প্রত্যাখ্যান । পুরো 23টি বছরে একমুহুর্তের জন্যেও পাকিস্থানের দুই অংশে ন্যাশনাল ইন্টিগ্রেশানের নু্যনতম সম্ভাবনা দেখা যায়নি । কারণ ধমর্ীয় পরিচয়, কখনওই জিন্নাহ সাহেবের দাবী অনুসারে ''এথনিসিটি''তে পরিণত হতে পারেনি ।
অনেক গুলো বাক্য অতিকথনদুষ্ট হয়ে গেল । মুক্তিযুদ্ধ এবং দ্্বিজাতিত্বত্ত্বের পারস্পরিক সম্পর্ক নিরুপণ করতেই এই লেখা শুরু করেছিলাম । আমরা 23 বছরের ইতিহাস থেকে যে কিউ.ই.ডিতে পৌঁছতে পারি , তা হলো আদর্শিকভাবে 1947 এর প্রথম লগ্ন থেকে 1971 পর্যন্ত যত আন্দোলন সংগ্রাম সংঘটিত হয়েছে তার প্রত্যেকটিই দ্্বিজাতিত্বত্ত্বের ভিত্তিমূলকে চ্যালেঞ্জ করে । ধর্মনিরপেক্ষতা তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নিউক্লিয়াস । এই ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তি পশ্চিম ইউরোপের প্রটেস্ট্যান্ট এথিকস নয় , বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ হতদরিদ্রমানুষের র্যাডিক্যাল অসাম্প্রদায়িক স্ম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনা । নুরুল দ্্বীন, বিরসা মুন্ডারা যেই চেতনা ধারণ করতেন ।
No comments:
Post a Comment