-ডেইলী সোপ। হুম.....সমস্যা কী জানোস?
- কী?
- সমস্যা হৈলো ডেইলী সোপ বানাইতে গেলে কম্পক্ষে বিশ-পঁচিশটা পর্ব আর আরো চল্লিশটা পর্বের প্ল্যান রেডি রাইখা মাঠে নামা লাগে।
- এইখানে তো আর আমাগো মাঠে নামার কোন ব্যাপার নাই। আমরা এখন নয় তলার বারান্দায়, রেলিঙ পার হৈলে সোজা দোজখ। শুরু করলেই করা হয়।
- উহু...আমি ভাবতাছিলাম অন্য কথা। এই প্লটটা ঠিক কোথা থিকা শুরু হৈয়া কোন দিকে যাইবো। জিনিসটা জেনুইন বারাইতে গেলে এমন কিছুই সমনে আনা লাগবো যেগুলা কোন প্রবাসী সরাসরি সামনে আনে না বা আনতে দ্বিধা বোধ করে। তুই খেয়াল কৈরা দেখ পশ্চিম ইউরোপ-উত্তর আমেরিকা মিলাইয়া এতো বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী প্রবাসী থাকা সত্ত্বেও বাংলা কথাসাহিত্যে এদের সত্যিকার জীবনযাপন প্রসংগে, বিশেষ কৈরা এদের যে আসল স্ট্রাগলের সময় সেইটা মোটামুটি অনুপস্থিত।
- হোগার বিষের কথা কেউ কৈতে চায় না। এক ইউরো ভাঙ্গাইলে একশো টাকা। দেশে বেড়াইতে গেলে বা দেশের কারো সাথে কোথাও দেখা হৈলে এইটারেই সব প্রবাসীরা নির্ধারক হিসেবে দেখে। টাকার হিসাবে বৃহত্তর ক্রয়ক্ষমতা দেখাইয়া আত্মতৃপ্তি বোধ করা, এইটারে তুই কৈতে পারোস প্রবাসী কামলাগো একমাত্র জব স্যাটিসফেকশান। যারা বিদেশ ফেরত বা প্রবাসী লেখক তারাও জিনিসটা খুব সতর্কতার সাথে এড়াইয়া চলে। যাতে তাগো গুয়ামারা খাওনের ইতিহাস, দেশের বিদেশমুখী সমাবেশ না জানতে পারে কিম্বা জানলেও ডিটেলসে আলাপ না করতারে।
- সেই দিক থিকা দেখতে গেলে আমাগো পিল্যান মতো এই সিরিয়াল পুরা নতুন কিছু হৈবো। কারণ এইখানে বাঙ্গালী মাখালাচাচীফুপুনানীদাদীরা যেই সমস্ত জিনিস নিজেগো রান্নাঘরের বাইরের জীবনের বিনোদন হিসাবে প্রত্যাশা করে, খুব সচেতনভাবে তার সবকিছু গোড়া থিকা ছাইটা ফালাইয়া দেওয়া হৈবো।
- গুট! এতোক্ষণে একটা বিপ্লবী জোশ আসতেছে। আরেক্টা বীয়ার দে....
রোদ পড়ে আসছে। সার্চ লাইটের খাড়া মনোযোগ এখন কির্শডিটমল্ড পেরিয়ে গ্রুইনেস্ট্রাসের দিকে। ভক ভক করে কয়েক খাবলা ধোঁয়া উড়ে গেলো মৃদু বাতাসের ধাক্কায় সোজা ডয়েটশে পোস্টের দিকে।
- প্রথমে নামের ব্যাপারটা ভাবি। এই সিরিয়ালের ঘটনা কোন শহররে কেন্দ্র কৈরা হৈবো?
- কাসেল! কোয়নিগস্ প্লাৎস তো বলাই হৈলো।
- ধুর ব্যাটা জার্মানীর প্রায় সব শহরেই গোয়থেস্ট্রাসে, শিলারস্ট্রাসের মতো একটা কৈরা কোয়নিগস্ প্লাৎস আছে।
- তারপরেও কাসেলে কোয়নিগস্ প্লাৎস হৈলো শহরের একেবারে সেন্টার। কেউ যদি কাসেল চিনে বৈলা দাবী করতে চায় তাইলে তারে কোয়নিগস্ প্লাৎস চিন্তেই হৈবো।
- এখন প্রশ্ন হলো পুরুষ। সিরিয়ালের বর্ননা কোন পুরুষে হৈবো। উত্তম পুরুষ?
- উত্তম পুরুষে আট-দশ পর্বের বিটিভির আশির দশকীয় সিরিয়াল হয়। মেগাসিরিয়াল হয় না।
- তাইলে পর্যবেক্ষকের অবস্থান ডায়নামিক হৈতে হৈবো।
- তাতো হৈবোই। একবার ছাত্র একবার শ্রমিক একবার রাজনৈতিক আশ্রিত সব রকম এঙ্গেলেই যাইতে হৈবো।
- শুরু হৈবো কোন এঙ্গেল থিকা আর বিবরনের বেশীরভাগ কাগো কেন্দ্র কৈরা যাইবো?
- রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়াদের বাস্তবতার বর্ননা আমরা শুনছি। আমাগো অভিজ্ঞতায় সেইটা নাই। সুতরাং শুরু আর মেইন পারসপেক্টিভ থাকবো ছাত্রগো দৃষ্টিকোণ। এর মাঝে মাঝে ঘটনার প্রয়োজনে একটা একটা কৈরা ভিউ বদলাইবো। একটা ব্যাপার হৈলো, ইউরোপে স্কলারশীপে আসা আর একেবারেই বিদেশে না আসা লোকজন এই ছাত্র আর অ্যাসাইলাম ডিস্টিংকশানটা এক্কেবারেই বুঝে না। এমনকী নর্থ আমেরিকার লোকজনও বুঝে না। এইটা মনে হয় একেবারেই ইউরোপের মূলভূমির ব্যাপার।
- হ। আসুইল (অ্যাসাইলাম) আর ছাত্রগো গ্যাঞ্জাম না দেখাইতে পারলে আসলে প্রবাসীদের পারস্পেক্টিভে কোন গল্প/উপন্যাস/নাটক/সিনেমা কিছুই হৈবো না।
- যেহেতু আমরা ছাত্র, কোন কিছুর বর্ননা দিতে গেলে আমাদের চেনা পারস্পেক্টিভের একটা প্রাধান্য থাকবোই। সুতরাং কাহিনির কেন্দ্রেও একজন ছাত্ররেই থাকতে হৈবো।
- সেই ছাত্ররেও অবশ্যই আমার মতো লুজার হৈতে হৈবো। কারণ লুজারগো থিকা বেশী ড্রামা, কোনদিনই ক্যারিয়ারিস্টগো জীবনে থাকতারে না।
- এইটা একটু চরমবাদী মন্তব্য হৈলেও মোটামুটি ঠিক। এইটার ত্রুটি হৈলো সীমানা। অর্থাৎ কতদিন পর্যন্ত লুজার, সেই প্রশ্নে। চাকরী/পিএইচডি পাওয়ার আগ পর্যন্ত স্কলারশীপ ছাড়া সব বিদেশী ছাত্রই লুজার।
- আসলে এক হিসাবে পরেও। দেশের থিকা বেশী আয়, দেশের থিকা অনেক বেশী সামাজিক নিরাপত্তা পাইয়া, তারাও যে ইউরোপে চলমান অর্থব্যবস্থায় শোষিত হৈতেছে সেই বোধ আর তাগো থাকে না।
- নাই কৈতে পারোস না। কৈতে পারোস যা পাইছে তাতেই সন্তুষ্ট। কারণ যা পাইছে, তাগো নিজেগো বুদ্ধিমতো সেইটা চলমান অর্থব্যবস্থার কৃপায়। সেইদিক থিকা তারা একদিকে যতদূর সম্ভব ভালগার পুঁজিবাদরে সমর্থন করে, অন্যদিকে সারাজীবন ধৈরা অঙ্ক করতে করতে সংস্কৃতি চেতনায় যে ভোগলা রৈয়া গেছে, চুড়ান্ত আনাড়ীর মতো ধর্ম পরিচয়ে উই ফিলিংস খুঁজতে গিয়া সেই ভোগলার গাঁইঠে আটকাইয়া হাঁসফাঁস করতে থাকে। জিগাইলে কয়, কুলটুরশক্ ( কালচারাল শক্)।
- এইতো গেলো সমাজতত্ত্বের কথা। কিন্তু নাটকে তো সবকিছু নাটকীয়তা দিয়া দেখান লাগে।
- সেই জন্যই তো আগে ভেজালের জায়গাগুলার আলাপ শেষ কৈরা রাখতেছি, যাতে কাহিনি শুরু হওয়ার পরে কোন রকম উত্তরাধুনিক পেজগী না লাগে।
- সেইটাই তো প্রশ্ন। পেজগীটা কাটলো কীভাবে?
- ভেরী সিম্পল। আসুইল-সাদাকলার চাকুরিজীবি-ছাত্র প্রত্যেকরে যার যার শ্রেনী চরিত্রের জায়গা থিকা ডিসপ্যাশনেটলী দেখাইতে হৈবো।
- ডিসপ্যাশনেটলী দেখানো কী ঈশ্বর ছাড়া কারো পক্ষে সম্ভব?
- যতটা সম্ভব ততটা। যতটা সম্ভব সেই বিশুদ্ধ প্রোলেটারিয়ান না হৈলেও মধ্যবিত্ত থিকা তার দূরত্ব কম না। কম হৈলে আর ইউরোপের মধ্যবিত্তরা ব্রেখটরে ভয় পাইতো না বা ভারতের বিশেষ কৈরা পশ্চিমবঙ্গের নিম্নমধ্যবিত্তরা ঋত্বিক ঘটক ফালাইয়া ঋতুপর্ন ঘোষের দিকে ঝুঁকতো না। ব্রেখটের নাটক যেই ভিউ থিকা দেখানো সেই ভিউরে ভদ্রলোকরা ডরাইতে শুরু করছে এইটা কিন্তু শ্রেনী হিসাবে "লুজার"গো অনেক বড় জয়!
- ডরায় বলা কি ঠিক? কৈতারোস অস্বস্তিবোধ করে।
- সেই অস্বস্তি কৈত্থিকা আহে? আসমান থিকা নিশ্চয়ই না! আসমান থিকা আহে খালি বৃষ্টির পানি, শিলা, তুষার আর পাখীর গু। অস্বস্তিবোধ করা মানেই প্রদর্শিত জিনিসের সাথে তার কোন না কোন ঝামেলা আছে। তুই আইজকা বাংলাদেশ ১৯৭১ ল্যাখা একটা টিশার্ট পৈড়া পাকি স্টুডেন্টগো সামনে যা নাইলে বাংলাদেশী কোন রাজাকার পরিবারের লুকের সামনে যা, দেখবি হয় চিল্লাচিল্লি শুরু করছে নাইলে উত্তরাধুনিক বাল ফালানি শুরু করছে। অর্থাৎ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে এমন কোন কিছুই হৈছে যার লগে তার স্পষ্ট কোন সমস্যা আছে।
- হুম... এইখানে সমস্যা হৈলো, সোশ্যালিস্ট রিয়েলিজম ব্যবহার করতে গেলে ফুড়ুৎ কৈরা গত পঁচিশ বছরে ডেভেলপ করা নিওলিবারেল ছাগুরা উইড়া যাইবোগা।
- সোশালিস্ট রিয়েলিজম ব্যবহার করা মানেই কি একগাদা মার্কসীয় পরিভাষা আর বিরক্তিকর নৈতিক বক্তৃতা দেওয়া? যদি সেইটা সত্যি সত্যি কোন না কোন অবস্থানের শোষিতের জীবনের অভিজ্ঞতা থিকা আইসা থাকে তাইলে পরিভাষার তুবড়ি না ছুটাইয়া....আমার মতে একেবারেই কোন বামপন্থী পরিভাষা ব্যবহার না কৈরা, প্রচলিত প্রতিক্রিয়াশীল পরিভাষাতেই শুধু তাঁর ইনার মেসেজের চরিত্রে রাজনীতিটুক দেওয়া যাইতে পারে। ইনফ্যাক্ট অরাজনৈতিক অ্যাজাম্পশান বৈলা তো পৃথিবীতে কিছু নাই তাই না?
- তা তো নাঈইই....
- আর আমরা কেউ চাইলেও আসুইলদের জীবনের শুরুতে যেই মারাত্মক নাটকীয়তা ছিল সেইটা সঠিক বর্ননায় আনতে পারুম না। সুতরাং গল্পের আপাতত কেন্দ্রীয় চরিত্র একজন ছাত্রই থাকবো কিন্তু সেইটা দেখা হৈবো আরেক্টা তৃতীয় অবস্থান থিকা অর্থাৎ ক্যামেরাম্যানের অবস্থান থিকা....
(চলবে)
- কী?
- সমস্যা হৈলো ডেইলী সোপ বানাইতে গেলে কম্পক্ষে বিশ-পঁচিশটা পর্ব আর আরো চল্লিশটা পর্বের প্ল্যান রেডি রাইখা মাঠে নামা লাগে।
- এইখানে তো আর আমাগো মাঠে নামার কোন ব্যাপার নাই। আমরা এখন নয় তলার বারান্দায়, রেলিঙ পার হৈলে সোজা দোজখ। শুরু করলেই করা হয়।
- উহু...আমি ভাবতাছিলাম অন্য কথা। এই প্লটটা ঠিক কোথা থিকা শুরু হৈয়া কোন দিকে যাইবো। জিনিসটা জেনুইন বারাইতে গেলে এমন কিছুই সমনে আনা লাগবো যেগুলা কোন প্রবাসী সরাসরি সামনে আনে না বা আনতে দ্বিধা বোধ করে। তুই খেয়াল কৈরা দেখ পশ্চিম ইউরোপ-উত্তর আমেরিকা মিলাইয়া এতো বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী প্রবাসী থাকা সত্ত্বেও বাংলা কথাসাহিত্যে এদের সত্যিকার জীবনযাপন প্রসংগে, বিশেষ কৈরা এদের যে আসল স্ট্রাগলের সময় সেইটা মোটামুটি অনুপস্থিত।
- হোগার বিষের কথা কেউ কৈতে চায় না। এক ইউরো ভাঙ্গাইলে একশো টাকা। দেশে বেড়াইতে গেলে বা দেশের কারো সাথে কোথাও দেখা হৈলে এইটারেই সব প্রবাসীরা নির্ধারক হিসেবে দেখে। টাকার হিসাবে বৃহত্তর ক্রয়ক্ষমতা দেখাইয়া আত্মতৃপ্তি বোধ করা, এইটারে তুই কৈতে পারোস প্রবাসী কামলাগো একমাত্র জব স্যাটিসফেকশান। যারা বিদেশ ফেরত বা প্রবাসী লেখক তারাও জিনিসটা খুব সতর্কতার সাথে এড়াইয়া চলে। যাতে তাগো গুয়ামারা খাওনের ইতিহাস, দেশের বিদেশমুখী সমাবেশ না জানতে পারে কিম্বা জানলেও ডিটেলসে আলাপ না করতারে।
- সেই দিক থিকা দেখতে গেলে আমাগো পিল্যান মতো এই সিরিয়াল পুরা নতুন কিছু হৈবো। কারণ এইখানে বাঙ্গালী মাখালাচাচীফুপুনানীদাদীরা যেই সমস্ত জিনিস নিজেগো রান্নাঘরের বাইরের জীবনের বিনোদন হিসাবে প্রত্যাশা করে, খুব সচেতনভাবে তার সবকিছু গোড়া থিকা ছাইটা ফালাইয়া দেওয়া হৈবো।
- গুট! এতোক্ষণে একটা বিপ্লবী জোশ আসতেছে। আরেক্টা বীয়ার দে....
রোদ পড়ে আসছে। সার্চ লাইটের খাড়া মনোযোগ এখন কির্শডিটমল্ড পেরিয়ে গ্রুইনেস্ট্রাসের দিকে। ভক ভক করে কয়েক খাবলা ধোঁয়া উড়ে গেলো মৃদু বাতাসের ধাক্কায় সোজা ডয়েটশে পোস্টের দিকে।
- প্রথমে নামের ব্যাপারটা ভাবি। এই সিরিয়ালের ঘটনা কোন শহররে কেন্দ্র কৈরা হৈবো?
- কাসেল! কোয়নিগস্ প্লাৎস তো বলাই হৈলো।
- ধুর ব্যাটা জার্মানীর প্রায় সব শহরেই গোয়থেস্ট্রাসে, শিলারস্ট্রাসের মতো একটা কৈরা কোয়নিগস্ প্লাৎস আছে।
- তারপরেও কাসেলে কোয়নিগস্ প্লাৎস হৈলো শহরের একেবারে সেন্টার। কেউ যদি কাসেল চিনে বৈলা দাবী করতে চায় তাইলে তারে কোয়নিগস্ প্লাৎস চিন্তেই হৈবো।
- এখন প্রশ্ন হলো পুরুষ। সিরিয়ালের বর্ননা কোন পুরুষে হৈবো। উত্তম পুরুষ?
- উত্তম পুরুষে আট-দশ পর্বের বিটিভির আশির দশকীয় সিরিয়াল হয়। মেগাসিরিয়াল হয় না।
- তাইলে পর্যবেক্ষকের অবস্থান ডায়নামিক হৈতে হৈবো।
- তাতো হৈবোই। একবার ছাত্র একবার শ্রমিক একবার রাজনৈতিক আশ্রিত সব রকম এঙ্গেলেই যাইতে হৈবো।
- শুরু হৈবো কোন এঙ্গেল থিকা আর বিবরনের বেশীরভাগ কাগো কেন্দ্র কৈরা যাইবো?
- রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়াদের বাস্তবতার বর্ননা আমরা শুনছি। আমাগো অভিজ্ঞতায় সেইটা নাই। সুতরাং শুরু আর মেইন পারসপেক্টিভ থাকবো ছাত্রগো দৃষ্টিকোণ। এর মাঝে মাঝে ঘটনার প্রয়োজনে একটা একটা কৈরা ভিউ বদলাইবো। একটা ব্যাপার হৈলো, ইউরোপে স্কলারশীপে আসা আর একেবারেই বিদেশে না আসা লোকজন এই ছাত্র আর অ্যাসাইলাম ডিস্টিংকশানটা এক্কেবারেই বুঝে না। এমনকী নর্থ আমেরিকার লোকজনও বুঝে না। এইটা মনে হয় একেবারেই ইউরোপের মূলভূমির ব্যাপার।
- হ। আসুইল (অ্যাসাইলাম) আর ছাত্রগো গ্যাঞ্জাম না দেখাইতে পারলে আসলে প্রবাসীদের পারস্পেক্টিভে কোন গল্প/উপন্যাস/নাটক/সিনেমা কিছুই হৈবো না।
- যেহেতু আমরা ছাত্র, কোন কিছুর বর্ননা দিতে গেলে আমাদের চেনা পারস্পেক্টিভের একটা প্রাধান্য থাকবোই। সুতরাং কাহিনির কেন্দ্রেও একজন ছাত্ররেই থাকতে হৈবো।
- সেই ছাত্ররেও অবশ্যই আমার মতো লুজার হৈতে হৈবো। কারণ লুজারগো থিকা বেশী ড্রামা, কোনদিনই ক্যারিয়ারিস্টগো জীবনে থাকতারে না।
- এইটা একটু চরমবাদী মন্তব্য হৈলেও মোটামুটি ঠিক। এইটার ত্রুটি হৈলো সীমানা। অর্থাৎ কতদিন পর্যন্ত লুজার, সেই প্রশ্নে। চাকরী/পিএইচডি পাওয়ার আগ পর্যন্ত স্কলারশীপ ছাড়া সব বিদেশী ছাত্রই লুজার।
- আসলে এক হিসাবে পরেও। দেশের থিকা বেশী আয়, দেশের থিকা অনেক বেশী সামাজিক নিরাপত্তা পাইয়া, তারাও যে ইউরোপে চলমান অর্থব্যবস্থায় শোষিত হৈতেছে সেই বোধ আর তাগো থাকে না।
- নাই কৈতে পারোস না। কৈতে পারোস যা পাইছে তাতেই সন্তুষ্ট। কারণ যা পাইছে, তাগো নিজেগো বুদ্ধিমতো সেইটা চলমান অর্থব্যবস্থার কৃপায়। সেইদিক থিকা তারা একদিকে যতদূর সম্ভব ভালগার পুঁজিবাদরে সমর্থন করে, অন্যদিকে সারাজীবন ধৈরা অঙ্ক করতে করতে সংস্কৃতি চেতনায় যে ভোগলা রৈয়া গেছে, চুড়ান্ত আনাড়ীর মতো ধর্ম পরিচয়ে উই ফিলিংস খুঁজতে গিয়া সেই ভোগলার গাঁইঠে আটকাইয়া হাঁসফাঁস করতে থাকে। জিগাইলে কয়, কুলটুরশক্ ( কালচারাল শক্)।
- এইতো গেলো সমাজতত্ত্বের কথা। কিন্তু নাটকে তো সবকিছু নাটকীয়তা দিয়া দেখান লাগে।
- সেই জন্যই তো আগে ভেজালের জায়গাগুলার আলাপ শেষ কৈরা রাখতেছি, যাতে কাহিনি শুরু হওয়ার পরে কোন রকম উত্তরাধুনিক পেজগী না লাগে।
- সেইটাই তো প্রশ্ন। পেজগীটা কাটলো কীভাবে?
- ভেরী সিম্পল। আসুইল-সাদাকলার চাকুরিজীবি-ছাত্র প্রত্যেকরে যার যার শ্রেনী চরিত্রের জায়গা থিকা ডিসপ্যাশনেটলী দেখাইতে হৈবো।
- ডিসপ্যাশনেটলী দেখানো কী ঈশ্বর ছাড়া কারো পক্ষে সম্ভব?
- যতটা সম্ভব ততটা। যতটা সম্ভব সেই বিশুদ্ধ প্রোলেটারিয়ান না হৈলেও মধ্যবিত্ত থিকা তার দূরত্ব কম না। কম হৈলে আর ইউরোপের মধ্যবিত্তরা ব্রেখটরে ভয় পাইতো না বা ভারতের বিশেষ কৈরা পশ্চিমবঙ্গের নিম্নমধ্যবিত্তরা ঋত্বিক ঘটক ফালাইয়া ঋতুপর্ন ঘোষের দিকে ঝুঁকতো না। ব্রেখটের নাটক যেই ভিউ থিকা দেখানো সেই ভিউরে ভদ্রলোকরা ডরাইতে শুরু করছে এইটা কিন্তু শ্রেনী হিসাবে "লুজার"গো অনেক বড় জয়!
- ডরায় বলা কি ঠিক? কৈতারোস অস্বস্তিবোধ করে।
- সেই অস্বস্তি কৈত্থিকা আহে? আসমান থিকা নিশ্চয়ই না! আসমান থিকা আহে খালি বৃষ্টির পানি, শিলা, তুষার আর পাখীর গু। অস্বস্তিবোধ করা মানেই প্রদর্শিত জিনিসের সাথে তার কোন না কোন ঝামেলা আছে। তুই আইজকা বাংলাদেশ ১৯৭১ ল্যাখা একটা টিশার্ট পৈড়া পাকি স্টুডেন্টগো সামনে যা নাইলে বাংলাদেশী কোন রাজাকার পরিবারের লুকের সামনে যা, দেখবি হয় চিল্লাচিল্লি শুরু করছে নাইলে উত্তরাধুনিক বাল ফালানি শুরু করছে। অর্থাৎ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে এমন কোন কিছুই হৈছে যার লগে তার স্পষ্ট কোন সমস্যা আছে।
- হুম... এইখানে সমস্যা হৈলো, সোশ্যালিস্ট রিয়েলিজম ব্যবহার করতে গেলে ফুড়ুৎ কৈরা গত পঁচিশ বছরে ডেভেলপ করা নিওলিবারেল ছাগুরা উইড়া যাইবোগা।
- সোশালিস্ট রিয়েলিজম ব্যবহার করা মানেই কি একগাদা মার্কসীয় পরিভাষা আর বিরক্তিকর নৈতিক বক্তৃতা দেওয়া? যদি সেইটা সত্যি সত্যি কোন না কোন অবস্থানের শোষিতের জীবনের অভিজ্ঞতা থিকা আইসা থাকে তাইলে পরিভাষার তুবড়ি না ছুটাইয়া....আমার মতে একেবারেই কোন বামপন্থী পরিভাষা ব্যবহার না কৈরা, প্রচলিত প্রতিক্রিয়াশীল পরিভাষাতেই শুধু তাঁর ইনার মেসেজের চরিত্রে রাজনীতিটুক দেওয়া যাইতে পারে। ইনফ্যাক্ট অরাজনৈতিক অ্যাজাম্পশান বৈলা তো পৃথিবীতে কিছু নাই তাই না?
- তা তো নাঈইই....
- আর আমরা কেউ চাইলেও আসুইলদের জীবনের শুরুতে যেই মারাত্মক নাটকীয়তা ছিল সেইটা সঠিক বর্ননায় আনতে পারুম না। সুতরাং গল্পের আপাতত কেন্দ্রীয় চরিত্র একজন ছাত্রই থাকবো কিন্তু সেইটা দেখা হৈবো আরেক্টা তৃতীয় অবস্থান থিকা অর্থাৎ ক্যামেরাম্যানের অবস্থান থিকা....
(চলবে)
No comments:
Post a Comment