Wednesday, July 23, 2008

টোপ দিলেই যে কেঁচো মাছ খেয়ে ফেলবে তার গ্যারান্টি কী? ৬

তারপর সমাবেশ শেষ হতে থাকে। আমাদের ঝরে পড়ার দিন আসে। অনবরত তাড়া খেয়ে সরে যেতে থাকি আপাত অপ্রত্যক্ষে। সেঁটে যাই বা যেতে চাই পুরনো দেয়াল কিংবা তালের গুড়িতে। আমাদের মধ্যে চিৎহয়ে পড়ে থাকি আমি। কাগজে আঁকিবুকি চলতেই থাকে। কেউ কেউ নড়ে চড়ে। রা কেড়ে এনে গিলে খায় কেউ। শেষ মেষ ভেউ ভেউ কেঁদে ফেলে ওরা আর আমি বেড়ালের মুখে ধরা ইঁদুরের মতো হুররে বলে কুটি কুটি হতে থাকি।

নতুন করে আবার কবিতায় ধরে। এবারে আমি অতি নিষ্ঠুর পাঠক। হায়হায়রেগেলামরেমরলামরে দেখা মাত্র কবিকে বাতিল করে দিতাম। কবিতায় কি খুঁজতাম জানিনা। কবিতায় আসলে কী খোঁজে পাগলা পাঠকে? ২০০০ সালে সম্ভবত স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচাইতে বেশী লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয় দেশের বিভিন্ন চিপাচুপা থেকে। ঘরে ছোট কাগজের টিলা তৈরী হলো ইত:স্তত। খালি কাগজে আবার আঁকিবুকি শুরু হলো। এরকম কোন একদিন এক বন্ধুর খাতায় দেখলাম কার যেন হাতের লেখা, কি জানি হিজিবিজি দেখতে কবিতার মতো :

দিমিত্রি শয়তান লোক ছিল
আমি তার পাখী খেয়ে ফেলেছিলাম;
ঈশ্বর আমাকে ভালোবেসে গুয়া মেরে দিলো
কারণ আমি দিমিত্রির পাখী খেয়ে ফেলেছিলাম

চৌকির উপর লাফিয়ে উঠি কবিতা পড়ে। সেদিন থেকেই সবুজ বাঘের কলমে রাপু খাপাং, তা সে যাই লিখুক না কেন, গদ্যপদ্যরম্য যাখুশিতাই। ঠিক এরকমই কোনকিছু খুঁজে বেড়াচ্ছিলাম দীর্ঘদিন। ২০০০ সালের শেষ থেকে নিয়মিত সাক্ষাত হতে থাকে। পকেটের ভিতর প্যাকেট আর প্যাকেটের ভিতর টকেটকে খুঁজে পাই। প্রায়শ: দেখা হতো কাঁচা রোদ ওঠা সকালে লাইব্রেরীর সামনের পুকুর পাড়ে।

পকেটের ভিতর প্যাকেট
আর প্যাকেটের ভিতর টকেট
টকেট প্যাকেট খেয়ে মুন্ডিক্যাট
মারা গেলো

একটা ঢুন্ডিক্যাট
আরেক্টা মুন্ডিক্যাট
তাঁদের দেখা হলো
মাঝপথে.......

তারপর কেন্দ্রীভূত হয়ে ইত:স্তত হাঁটাচলা। কয়েকটা মাস নেচে নেচে বুঝলাম এই নাচটুকুই বাকি ছিল এতকাল। আরো বরখুরদার জোটে, জোটে আপাত তামশগীর। মোটামুটি সকলেই বুঝে গেছে বুঝাবুঝির পথে প্রচুর ঝামেলা। তখন পুঁজি বলতে কিছু সদ্যপ্রেত স্বপ্ন। তারা আবার থাবা পেতে লুকোচুরি খেলে। সরুচোখে চোখ মেরে মিলায় অসমস্বত্ত্ব বৈকুণ্ঠে।

পিস্তল ছিল হরিৎবর্ণের প্রজাপতি ধরায় ওস্তাদ
কিন্তু সে বাঘ ধরতে পারতো না
একবার বাঘের কামড় খেয়ে
পাঁচদিন পড়ে ছিল হাসপাতালে
কেউ দেখতে যায় নি

প্রকৃত নৃত্য মৃতের ভেক ধরা পিস্তলেরই পোষায়। বোধিসত্ত্ব লাভ হলো। পলোর ফাঁকে পলায়নপর সুজাতাদের কপ্ কপ্ ধরে ফেলার মহড়া দিতে দিব্যচক্ষু হাট করে খোলে। আলীকান্তের জানালায় বংশাই নদীর হাওয়া ফুরে পরমার্থ চেঁচায়,

ওই আমার খুব ভালো লাগতাছে!

No comments: